কওমি মেয়েদের বোরকা-হিজাব নিয়ে প্রশ্ন তুললেন এমপি ফকরুল ইমাম
সংসদ সদস্য ফকরুল ইমাম বলেছেন, দেশে প্রাইমারি থেকে সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ঝামেলা রয়েছে। আমরা লক্ষ্য করছি প্রাইমারি স্কুলগুলোতে সুবিশাল ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে ছাত্র-ছাত্রী বাড়েনি। বরং কমেছে। বিনামূল্যে শিক্ষা দেওয়া হলেও সেখানে কোনভাবে শিক্ষার্থী বাড়ছে না। এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। কমে গিয়ে এসব শিক্ষার্থী যাচ্ছে কোথায়? দেখলাম তারা এলাকায় গড়ে ওঠা ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ও কওমি মাদ্রাসায় বেশি ভর্তি হচ্ছে। কওমি মাদ্রাসা খুলতে কোন অনুমোদন লাগে না। কেউ দিতে চাইলেই হলো। এর কারণ আমি খুঁজে পাই না। অথচ বিনামূল্যে শিক্ষার পরিবর্তে টাকা দিয়ে কেন কওমি মাদ্রাসাগুলোতে যাচ্ছে, তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সংসদ সদস্য বলেন, সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, এলাকায় এলাকায় কওমি মহিলা মাদ্রাসা বেড়েছে। এখানে মেয়েরা ভোরে মাদ্রাসায় যায় বিকেল ৪টা পর্যন্ত থাকে। এখানে মেয়েরা ভোরে বোরকা-হিজাব পরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে যাওয়া আসা করে। এখানে কী শিক্ষা দেওয়া হয়, জানা দরকার। নিশ্চয় এখানে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান পড়ানো হয় না। কী বিষয় পড়ে তা জানা দরকার।
তিনি বলেন, মাননীয় স্পিকার আমাদের স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে মহানবীর জীবনী ও বিদায় হজের ভাষণ নিয়ে গল্প ছিল, এসব বাদ দেওয়া হয়েছে। যে শিক্ষা ব্যবস্থাগুলো প্রাইমারিতে আছে, ক্লাস টুতে কি করেছে, তৃতীয় শ্রেণীতে কি করছে। এদেশে সবাই মিলে কাজ করি, একটা মহানবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী ছিল। সেটা বাদ দিয়েছে। ক্লাস থ্রিতে খলিফা হজরত আবুবকর (রা.) এর একটা সংক্ষিপ্ত জীবনী ছিল। সেটা বাদ দিয়েছে। ক্লাস ফোরে খলিফা হযরত ওমরের জীবনী ছিল, সেটা বাদ দিয়েছে। ক্লাস ফাইভে বিদায় হজ, শেষে নবীর জীবনী ছিল, সেটা বাদ দিয়েছে। পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে একটি কবিতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেটি ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন বিরোধী কবিতা। আর ষষ্ঠ শ্রেণিতে লাল গরু নামক একটি ছোট গল্প আনা হয়েছে, যেখানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে, গরু হচ্ছে মায়ের মতো। তাই গরু জবাই করা ঠিক নয়। অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদ। সপ্তম শ্রেণির বইতে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লাল নামক একটি গল্প ঢোকানো হয়েছে, যেখানে শেখানো হচ্ছে হিন্দুদের কালিপূজা ও পাঠাবলির কাহিনী। অষ্টম শ্রেণির বইতে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ রামায়ণের সংক্ষিপ্ত রূপ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো কীসের আলামত? মাননীয় স্পিকার? আমরা সবাই একসঙ্গে থাকতে চাই। কিন্তু একটা ধর্মের গ্রন্থকে আপনি বাদ দিয়ে আরেকটি ধর্মের অগ্রাধিকার দিয়ে আপনি সংস্কৃতি বদলের চেষ্টা করবেন। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দেখতে হবে।