ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করা ছাড়া কিছুই ভাবিনি : শিক্ষামন্ত্রী
‘যখন ছাত্রলীগ করার বয়স হয়েছিল, তখন ছাত্রলীগ ছাড়া আর কিছুই কখনও ভাবিনি’ বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা সংলগ্ন বটতলায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দিনব্যাপী রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মতামত ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ স্বেচ্ছায় এ রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডা. দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যখন ছাত্রলীগ করার বয়স হয়েছিল তখন ছাত্রলীগ ছাড়া আর কিছুই কখনও ভাবিনি। এখানে একটা ভার্চুয়াল ব্লাড ব্যাংক তৈরি হয়েছে এবং এটা যদি কাজ করে তাহলে আমাদের ব্লাডের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা সম্ভব হবে। আগে মানুষ রক্ত দিতে চাইত না, কিন্তু এখন নিজেদের আপনজনকে বাঁচানোর জন্য হলেও মানুষ রক্ত দিতে এগিয়ে আসছে। ছাত্রলীগের ৫০ লাখ কর্মীর এই ভার্চুয়াল ব্লাড ব্যাংক সফলভাবে কাজ করলে বাংলাদেশের রক্তের চাহিদা পূরণ হবে।
এই ক্যাম্পাসে সর্বাধিকবার এসেছি রক্ত নিতে এমন স্মৃতিচারণা করে দীপু মণি বলেন, এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে একজন মুমূর্ষু মানুষকে বাঁচানো সম্ভব। অথচ এই রক্তটাই তিন মাস পর নষ্ট হয়ে যায়।
এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক রক্ত দিয়েছি। ছাত্রলীগকে তৈরি করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য। আর তার স্বপ্নই ছিল এই দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে তৈরি করা।
এ সময় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগাছা পরগাছার বিষয়ে আমাদের অত্যন্ত সচেতন হতে হবে। কাউকে স্বজনপ্রীতি করে দল ভারী করতে দেওয়া যাবে না। আমরা মাঝেমধ্যে নিজেদের দল ভারী করার জন্য নিজেদের পছন্দমতো যে কাউকে সংগঠনে নিয়ে নিচ্ছি। যার ফলে সাংগঠনিক দুর্বলতা তৈরি হচ্ছে।
মরণোত্তর চক্ষুদানকে ইসলামে সাদকায়ে জারিয়া হিসেবে দেখা হয় জানিয়ে শিক্ষান্ত্রী মরণোত্তর চক্ষুদানের প্রতি যুবকদের উৎসাহিত করে বলেন, আমাদের দেশে কিডনি পাওয়া যায়, ব্লাড পাওয়া যায় কিন্তু কেন জানি মানুষ চক্ষু দানের ব্যাপারে বিমুখ। আমাদের এই চক্ষুদান বা কর্ণিয়ার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কে দীপু মনি বলেন, আমরা আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ দেখতে চাই না। এজন্য আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে হবে। সর্বদা মাস্ক পরিধান করে চলাফেরা করতে হবে।
আলিয়া মাদ্রাসার আন্দোলন সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা যেটা করছে এটা ঠিক নয়। ওখানে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের ভবন হবে। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত।সেই সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া উচিত নয়। শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস নিয়ে যদি বিশেষ কোনো কথা থাকে তাহলে তারা যেকোনো সময় আমার সঙ্গে কথা বলতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য সবসময় আমার দরজা খোলা আছে।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তখন তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করা। আমাদের কোনো কাজকর্মে যেন আমাদের প্রিয় অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কষ্ট পেতে না হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জামাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চক্ষুবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব ডা. এম এ আজিজসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।