ভারপ্রাপ্ত জেলা জজসহ তিনজনকে প্রত্যাহারের দাবিতে আইনজীবীদের আদালত বর্জন
চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. বজলুর রহমান ও দুই কর্মচারীকে প্রত্যাহারের দাবিতে আদালত বর্জন কর্মসূচি শুরু করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর হোসেন অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যকরী সদস্যদের লাঞ্ছিত এবং কয়েকজনকে মারধরের ঘটনায় এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়।
কর্মসূচি ঘোষণা কালে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালিম হোসেনসহ সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা ১১টায় জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জরুরি সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কর্মচারী দুজন হলেন, জেলা জজ আদালতের নাজির মো. মাসুদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) জহুরুল ইসলাম।
আইনজীবীরা জানান, সদ্য বিদায়ী জেলা ও দায়রা জজ রেজা মো. আলমগীর হাসান গত ১৫ মার্চ চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ কে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে যান। শেষ কর্ম দিবসে তিনি জেলা জজ আদালতের নাজির মো. মাসুদুজ্জামানকে অনুলিপি শাখার প্রধান তুলনা সহকারী পদে বদলি এবং প্রেষণে রেকর্ড কিপার হিসেবে দায়িত্ব দেন। সেই সঙ্গে জেলা জজ আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) নুরুল হককে নাজির পদে নিয়োগ প্রদান করেন। মো. মাসুদুজ্জামান গত চারদিনেও নুরুল হককে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট আদালতে অচলাবস্থা দেখা দেয়।
বিষয়টি সুরাহা করতে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক তালিম হাসানসহ কার্যকরী পরিষদের সদস্যরা আদালত পরিচালনার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রাজজ মো. বজলুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে খাসকামরায় যান। ওই সময় বিচারকের সামনেই মাসুদুজ্জামান ও জহুরুল ইসলামসহ আদালতের কর্মচারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আইনজীবীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। হামলায় আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ্দিন ও কার্যনির্বাহী সদস্য সাজ্জাদ হোসেন রকি আহত হন। খবর পেয়ে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লুৎফুল কবীরের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং আইনজীবীদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলা আইনজীবী সমিতি আজ বেলা ১১টায় বিশেষ জরুরি সাধারণ সভার ডাকে। সভা চলাকালে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ মো. ফকরুল আলম খান সেখানে যান এবং আইনজীবীদের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান।
সভাপতি আলমগীর হোসেন জানান, এই হামলার ঘটনায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক মামলা করা হবে। সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানানো হবে।