হাসপাতালের পুকুরজুড়ে পদ্মফুলের মেলা
হাসপাতালের পুকুরে ফুটে আছে শত শত পদ্মফুল। রোগী ও তার স্বজনরা এলে মন ভরে ওঠে তাঁদের। শত যন্ত্রণা নিয়েও এমন পরিবেশে খুঁজে পান কিছুটা প্রশান্তি। শুধু রোগী ও স্বজনরা নন, নওগাঁর সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুকুরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন দূরদূরান্তের দর্শনার্থীরাও।
১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বর্তমানে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি শিশুবান্ধব হাসপাতাল হিসেবে এলাকাবাসীর মুখে মুখে। হাসপাতালটির পরিবেশ সুন্দর রাখতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। ২০১৮ সাল থেকে তিন দফায় পুকুরে আনা হয় পদ্মফুলের গাছ। এখন তা ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে। এমন উদ্যোগ নেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুহুল আমিন।
হাসপাতালে ঘুরতে আসা বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, এ হাসপাতালে এসে এর পরিবেশ মন ভালো করে দেয়, অর্ধেক যেন সেরে ওঠে ফুরফুরে পরিবেশে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুহুল আমিন বলেন, ‘পদ্মফুল সৌন্দর্যের প্রতীক। গোবরে পদ্মফুল, পদ্ম পাতায় জল—এগুলো বাংলা সাহিত্যে বাগধারা হিসেবে বহুল প্রচলিত। ধামইরহাটের আলতাদিঘী রাশি রাশি পদ্ম একদিন আমাকে মুগ্ধ করেছিল। তারপর ব্যাপারটা মাথায় আসে। সেই থেকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের পুকুরটিতে পদ্মফুলের স্বপ্ন দেখা শুরু করি।’
রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘তারিখটা স্পষ্ট মনে আছে—২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর। সেই থেকে তিন দফা গাছ লাগিয়ে তিন বছরের চেষ্টায় স্বপ্ন আজ সত্যি হয়েছে। হাসপাতালে একটা সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে বাইরের সব দৃশ্য সর্বস্তরের মানুষের নজর কেড়েছে।’
সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হাসপাতালের চিত্র কিছুদিন আগেও এমন ছিল না। হাসপাতাল পুকুরটি পতিত পড়ে ছিল। ওই পুকুরে সারা বছর ময়লা-আবর্জনা ভরে থাকত। এখন হাসপাতালের পুকুরটি যেন হেসে উঠেছে।’
ব্যতিক্রম এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান ইউএনও।
নওগাঁর সিভিল সার্জন আবু হেনা মো. রায়হানুউজ্জামান সরকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে পুকুরটির সৌন্দর্য বাড়াতেই এখানে পদ্মের কন্দ লাগিয়েছেন রুহুল আমিন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পুকুরটিতে সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ বলে আমি মনে করি।’
সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে বাইরের সবদৃশ্য সর্বস্তরের মানুষের নজর কেড়েছে। এ হাসপাতাল দেখে অনেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।’
এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ায় সিভিল সার্জন আবু হেনা মো. রায়হানুউজ্জামান সরকার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুহুল আমিনকে ধন্যবাদ জানান।