‘নব্য জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা’ রিমান্ডে
রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) আধ্যাত্মিক নেতা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর সেনপাড়া পর্বতা এলাকা থেকে আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দাবি করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনালের (সিটিটিসি) পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম আসামি আবুল কাশেমকে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার সাতদিনের রিমান্ড দেন।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি সমর্থনপুষ্ট একজন প্রশিক্ষক। তিনি জিহাদের ফতোয়াদানকারী ও জিহাদবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ বই-পুস্তকও লিখতেন। আসামি জেএমবিপ্রধান তামিম চৌধুরী এবং রাজীব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, জঙ্গি হামলার ঘটনার অর্থদাতা, মদদদাতা পলাতক আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ এবং গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে এই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।’
আবুল কাশেম দিনাজপুরের রানীর বন্দর এলাকায় একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ডিএমপির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জে অভিযানে নিহত গুলশান হামলার অন্যতম হোতা হিসেবে পরিচিত তামিম চৌধুরী ও আবুল কাশেমদের যৌথ প্রয়াসে ২০১৩ সালে বাংলাদেশে নব্য জেএমবির জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের সূচনা হয়।
‘সে (আবুল কাশেম) সপরিবারে অনেক আগে থেকেই পুরাতন জেএমবির সঙ্গে জড়িত ছিল। সে নব্য জেএমবির বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট-সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রমে তার নিজস্ব মনগড়া ধর্মীয় মতবাদ প্রদান করে দলটিকে হিংস্র করে তোলে। ২০০৯ সালে জেএমবির একাংশের আমির মাওলানা সাইদুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর সে বিদ্রোহী অংশ (নিউ জেএমবির) আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল।’
‘নব্য জেএমবির প্রধান তামিম চৌধুরী, মারজান, হাতকাটা মাহফুজ, উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডার রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীরসহ নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা তাঁর অনুরক্ত ছিল। ইতোপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত অনেক জঙ্গি সদস্যের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছিল।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘একই সঙ্গে ধর্মীয় উগ্রবাদ সম্পর্কিত বেশ কিছু বই লিখেছে, যা নব্য জেএমবির প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে বাধ্যতামূলকভাবে পাঠ্যভুক্ত ছিল। তাঁর লেখা নামে-বেনামে বইগুলোর মধ্যে রয়েছে : ১. দাওলার আসল রূপ ২. জিহাদ কেন করবেন ৩. ইসলামী বসন্ত ইত্যাদি।’
এদিকে আবুল কাশেমকে আটকের পর ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামও প্রায় একই ধরনের বক্তব্য দেন।