সাইবার অপরাধে ১৪ বছর সাজা হবে : আইনমন্ত্রী
সাইবার অপরাধ দমনে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের শাস্তির বিধান রেখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এই আইন হলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে তা দূর হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আজ রোববার সচিবালয়ে আইনটির খসড়া নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।
৫৭ ধারা নিয়ে যে সমালোচনা আছে তা আর থাকবে না উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা নিয়ে যে উদ্বেগ ছিল, সেগুলো এখানে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয়েছে। ৫৭ ধারাটা স্পষ্ট নয়। এখানে স্পষ্টীকরণ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের চিন্তা হচ্ছে, ৫৪, ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ ধারা যখন আইসিটি আইন পাস করা হবে তখন এর আওতায় নিয়ে নেওয়া হবে।’
এ সময় আইনমন্ত্রী আরো বলেন, অপরাধের ধরন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির পাশাপাশি সর্বনিম্ন শাস্তিও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
এ সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়নে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি এজেন্সিও গঠন করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাটি নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। এ ধারা বাতিল চেয়ে আদালতে রিট করা হয়।
বিশেষ করে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে এই আইনে গ্রেপ্তারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধারাটির ‘অপব্যবহার’ বন্ধ ও বাতিলের দাবিতে সরব মুক্তমনারা। তাঁদের মতে, এ ধারা বিতর্কিত। আইনটি এমনভাবে করা হয়েছে, অনলাইনে যেকোনো তথ্য আদান-প্রদানকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পারবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যা অন্তরায়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ইলেকট্রনিক ফর্মে মিথ্যা, অশ্লীল অথবা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত অপরাধ ও এর দণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে- '(এক) কোনো ব্যক্তি যদি ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ। (দুই) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বছর এবং অন্যূন সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।'