এস আলম গ্রুপের সম্পদ না কেনার পরামর্শ গভর্নরের
এস আলম গ্রুপের সম্পদ না কেনার পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, এই গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন জমি সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছে। এগুলো ঠেকানো জরুরি। আমানতকারীদের স্বার্থে ইসলামী ব্যাংকের নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। দরকার হলে বোর্ড পরিবর্তন করা হবে।
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এসব কথা বলেন।
ছয়টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে জানিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, শিগগিরই আরও কয়েকটি পুনর্গঠন করতে কাজ চলছে। শিগগিরই তা করা হবে। সেখানে রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে এসব বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা করবে। ইসলামী ব্যাংকের যে বোর্ড গঠন করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ স্বাধীন, এখানে কোনো মালিক নেই। তাই তাদেরকে সরকারের স্বার্থে, ব্যাংকের স্বার্থে এবং আমানতকারীদের স্বার্থে কাজ করতে হবে। যদি তারা ঠিকমতো কাজ করতে না পারে তাহলে যে বোর্ড দিয়েছি, প্রয়োজন হলে সেই বোর্ড ভেঙে পুনর্গঠন করবো।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, এস আলম গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সব ব্যাংকের লেনদেন ঋণ স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন জমি সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছে। এসব জমি সম্পদ দেখিয়ে গ্রুপটি ব্যাংক লোন নিয়েছে। এখান থেকে সেই লোনের টাকার বের করা হবে। তাই এগুলো বিক্রি ঠেকানো জরুরি।
ছয়টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, শিগগিরই আরও কয়েকটি পুনর্গঠন করা কাজ চলছে। তারা রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে এসব ব্যাংক পরিচালনা করবে। যদি তারা ঠিকমতো কাজ না করে তাহলে তাদেরকে পরিবর্তন করা হবে।
মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, দেশে বড় বন্যা হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি যেন না বাড়ে সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। তবে এটা হতে পারে, আগামী দুই-তিন মাস মূল্যস্ফীতি কমতে না পারে। তবে আশা করছি, ৮ মাসের মধ্যে কমে আসবে। কারণ মূল্যস্ফীতি কমাতে দুই দিক থেকেই কাজ করতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিয়েছি। সাপ্লাই ঠিক হলে মূল্যস্ফীতি এমনিতেই কমে আসবে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এখন আর ডলার বিক্রি করব না। সরকারি পেমেন্ট পরিশোধ করার জন্য বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করে সোনালীসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে দেওয়া হবে। যেসব এলসি আগে খোলা হয়েছে সেসব দায় পরিশোধ, বিদ্যুতের দেনা পরিশোধ ও সার আমদানির বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বাজার থেকেই আমরা ডলার ব্যবস্থাপনা করছি।
আমরা এরই মধ্যে ব্যাংক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি মন্তব্যে করে গভর্নর বলেন, আমরা কাজ করছি। সামনে ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াবে, তার জন্য একটু সময় লাগবে। একটু অপেক্ষা করুন। বেশি সুদের আশায় বা অন্য কোন কারণে আপনারা যেসব ব্যাংকগুলোতে টাকা রেখেছেন, এখন এক সঙ্গে সবাই মিলে টাকা তুলতে গেলে হবে না। যতটুকু না তুললেই নয়, ততটুকু তুলুন।
আমানতকারীদের টাকা তোলার প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, সবাই এক সঙ্গে টাকা তুলতে গেলে পৃথিবীর কোনো ব্যাংকে এতো টাকা দিতে পারবে না। সম্ভবও না। তাই এই মুহূর্তে আমানতকারীদের ধৈর্য ধরতে হবে। যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু টাকা তুলুন। অতিরিক্ত টাকা ব্যাংক থেকে এখন না উঠানোর অনুরোধ করছি।