অ্যাডিনয়েড বড় হয়ে গেলে চিকিৎসা কী?
অ্যাডিনয়েড বড় হয়ে গেলে বিভিন্ন সমস্যা হয়। তখন দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬৫৭তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. নাজমুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের নাক কান গলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অ্যাডিনয়েড বড় হয়ে গেলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়?
উত্তর : বাচ্চার এডিনয়েড বড় হয়েছে, টনসিল বড় হয়েছে। আবার হয়তো আলাদা করে দুটো বড় হচ্ছে। আবার শুধু অ্যাডিনয়েড বড় হয়েছে, টনসিল স্বাভাবিক আছে বা টনসিল বড় হয়েছে, তার অ্যাডিনয়েড একটুও বাড়েনি। অথবা দুটো একসঙ্গে বেড়েছে। যদি অ্যাডিনয়েড বড় হয়ে যায় এবং উপসর্গ তৈরি করতে থাকে, তাহলে চিকিৎসা করতে হবে।
আমরা বাচ্চার চেহারা দেখলে দেখব যে চেহারা কেমন যেন ফ্ল্যাট হয়ে গেছে। একটা বোকা চেহারা হয়ে যাচ্ছে। নাকের পাশে যে ভাঁজ থাকে, সেটি কেমন যেন মিলিয়ে যাচ্ছে। ওপরের সারিতে যে দাঁত দুটো আছে, মাঝখানের দাঁত দুটো কেমন যেন খুব নজরকাড়া বড় হয়ে যাচ্ছে। তালুটা বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তার মাড়ি স্পঞ্জের মতো হয়ে যাচ্ছে। বাচ্চার মনোযোগ কমে যাচ্ছে। কানে কম শুনছে। তাহলে তো অ্যাডিনয়েড চিন্তা করতেই হবে। তার যখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর রোগনির্ণয় হয়ে যাবে, তখন কিন্তু অ্যাডিনয়েডকে অপসারণ করে দিতে হবে।
আড়াই-তিন বছর বয়সে অ্যাডিনয়েড বড় হতে শুরু করবে। সাত থেকে নয় বছর বয়সে এটি সর্বোচ্চ একটি আকৃতিতে পৌঁছে যাবে। তবে ১২, ১৪, ১৫ বছরের বাচ্চাদেরও আমরা অ্যাডিনয়েড পেয়েছি। তবে সেটি হচ্ছে খুব কম সংখ্যাতে। এই সময়টা শেখার বয়স। প্রতিদিন বাচ্চারা এ সময়ে শেখে। ভালো শিখতে হলে ভালো শুনতে হবে। এডিনয়েডের কারণে বাচ্চারা কানে পানি জমে শুনতে পায় না। শুনতে না পেল ওরা পিছিয়ে পড়ে, কাজেই ওদের ভালো শোনার স্বার্থে, অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে সমতালে এগিয়ে যাওয়ার স্বার্থে চিকিৎসা করতে হবে।
পিওটন অডিওমেট্রি ও ইমপিডিয়েন্স দুটো পরীক্ষা আছে। পিওটন অডিওমেট্রির মাধ্যমে আমরা দেখি যে শিশুটি কেমন শুনছে। স্বাভাবিক শুনছে কি না। যদি না শুনে থাকে, কতখানি কম শুনছে। আর ইমপিডিয়েন্স দিয়ে আমরা সহজভাবে বুঝতে চাই, কানের পর্দার পেছনে পানি জমেছি কি জমেনি। যদি অ্যাডিনয়েডের কারণে জমে যায়, তাহলে অ্যাডিনয়েডের কারণে অপসারণ করব। মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে আমরা কানের পর্দাকে দেখব। তখন আমরা কানের পর্দায় নিজেরাই একটি ছোট্ট ছিদ্র করে, ভেতরে যে পানিটা জমে আছে, সেটি বের করে দেব। কারো কারো ক্ষেত্রে একটি ভেন্টিলেশন টিউব পর্দার সঙ্গে লাগিয়ে দিয়ে আসতে হয়। যাতে এর পরে কখনো পানি জমে গেলে সেটা দিয়ে বের হয়ে আসে। আর অ্যাডিনয়েড যেহেতু আমরা অপসারণ করে দিয়েছি, কাজেই সেই জায়গা এখন বড় হয়ে যেতে পারে। শ্বাসপ্রশ্বাসের যে অসুবিধা ছিল, দূর হয়ে যাবে। বাচ্চাটা আস্তে আস্তে স্বাভাবিক শ্রবণশক্তিতে ফিরে আসবে। আর ১০ জনের মতো স্বাভাবিক সুন্দর জীবনযাপন করবে।