ধীরগতির পায়ের রক্তনালির ব্লক, কী করবেন?
রক্তনালির ব্লকের চিকিৎসা দুভাবে করা হয়। একটি হঠাৎ করে, আরেকটি ধীরগতির। ধীরগতির রক্তনালি ব্লকের চিকিৎসায় করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৮৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. সাকলায়েন রাসেল। বর্তমানে তিনি ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ধীরগতির সমস্যাটি কত দিন চলতে থাকে?
উত্তর : স্ট্যানটিং বা রিং পরাতে হচ্ছে, তাদের বাইপাস অস্ত্রোপচার করতে হচ্ছে, এদের কিন্তু অনেকেরই পায়ে সমস্যা। ব্লক তো হার্টে হয় না। হার্টের রক্তনালিতে ব্লক হয়। পায়ের রক্তনালি, হাতের রক্তনালি তো ব্লক হয়। এটা খুব ধীর একটি পদ্ধতি। ১০ থেকে ১৫ বছর লাগে পুরোপুরি ব্লক হতে। তাই এ ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো দেখা দিলেই যদি চিকিৎসকের কাছে যান, অস্ত্রোপচার পর্যন্ত যেতে হয় না।
ডুপ্লেক্স পরীক্ষা করে আমরা রোগ নির্ণয় করি। গলার রক্তনালিতে ব্লক হয়, এমনকি পেটের রক্তনালিতেও ব্লক হয়। আমরা কেবল আলট্রাসনোগ্রাম করে দেখি নিই যে তার ব্লকটা কেমন হচ্ছে। যদি পরীক্ষা করে দেখি তার ব্লকের পরিমাণ ৭০ ভাগ-৬০ ভাগের মতো, ওই পর্যায়ে আমরা বলি যে আপনি যেমন হার্টে এনজিওগ্রাম করেছেন, তেমনি পায়েও এনজিওগ্রাম করতে হবে। এর চিকিৎসায় হার্টের মতো নানা চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
প্রশ্ন : কার ক্ষেত্রে কী ধরনের চিকিৎসা দিতে হয়, সেটি কিসের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর : বিভিন্ন প্রশিক্ষণে আমাদের বলা হয়, শুরুতেই রোগীকে অস্ত্রোপচার করার কোনো দরকার নেই। এমনকি রিং পরানোরও কোনো দরকার নেই। একজনকে যদি দেখা যায় যে তাদের পায়ের রক্তনালিতে ব্লক রয়েছে, এটি তাকে কষ্ট দিচ্ছে, তারপরও অস্ত্রোপচার করার দরকার নেই। তাদের কথা হচ্ছে আপনি কেবল তাদের জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করতে বলবেন। সেটা কী? আপনি ধূমপান বন্ধ করবেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, আপনার রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণটা বেশি রয়েছে কি না, সেটি আপনি ঠিক করবেন, নিয়মিত আপনি ব্যায়াম করবেন। এগুলো করার পর আপনি তাকে কিছু ওষুধ দেবেন, সে যদি এই নিয়মগুলো মেনে চলে, যদি বেশ কিছুদিন স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারে, তাহলে তাকে ছেড়ে দিই। তবে যদি দেখা যায় সে বিশ্রাম নেওয়ার সময় হাতে বা পায়ে ব্যথা হচ্ছে, কিংবা তার পায়ে ঘা হয়ে গেছে, সে ঘা আর ঠিক হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে আমরা বলি, আপনি এনজিওগ্রাম করেন, এনজিওগ্রাম করার পর ব্লকের ধরন অনুযায়ী কারো কারো ক্ষেত্রে বলি আপনাকে রিং পরাতে হবে, কারো কারো ক্ষেত্রে বলি, আপনার বাইপাস করতে হবে। পায়ে কিন্তু চিকিৎসার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। যখন দেখা যাচ্ছে আর কিছুই করা যাচ্ছে না, তখন আমরা তাকে ইনজেকশনথেরাপি দিই। এমনকি স্টিম সেলথেরাপি নামেও থেরাপি রয়েছে। ওখানে আমরা একদম নতুন রক্তনালির মতো দিতে পারছি।
অনেকে হয়তো জানেন না যে পায়ের রক্তনালিতে রিং পরানো যায়, বাইপাস করা যায়। পায়ের রক্তনালিতে ব্লক থাকলে, ঘা থাকলে অনেকে বলে পা কাটতে হবে। আসলে না।
ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে স্বতন্ত্রভাবে সব ধরনের ভাসকুলার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাই এ ধরনের সমস্যা যাদের রয়েছে, তাদের প্রতি অনুরোধ রইবে—একবার হয়তো ভাসকুলার সার্জনের কথা ভাবুন। সে আপনাকে অনেক ভালো সাহায্য করতে পারবে এ বিষয়ে।