হেমোরেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসায় করণীয়
স্ট্রোক দুই ধরনের। ইসকেমিক স্ট্রোক (রক্ত চলাচল বন্ধের কারণে হওয়া স্ট্রোক) ও হেমোরেজিক স্ট্রোক (রক্তক্ষরণের কারণে হওয়া স্ট্রোক)।
হেমোরেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসায় করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৯১তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক জিল্লুর রহমান। বর্তমানে তিনি ল্যাব এইড হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : হেমোরেজিকের ক্ষেত্রে করণীয় কী?
উত্তর : এই স্ট্রোকগুলো সাধারণত বেশি মারাত্মক হয়। এই সব রোগীর সাধারণত অজ্ঞানের মাত্রা বেশি থাকে। এতে দেখা যায় যে রোগী গভীরভাবে অজ্ঞান থাকে। সাধারণত অঙ্গহানি হয়। মানে প্যারালাইসিস হয়ে যায়, কথা বন্ধ হয়ে যায় অথবা খিঁচুনি হয়ে যায়। অজ্ঞানের মাত্রাটাও বেশি থাকে। এটি দিয়ে আমরা বুঝতে পারি কোন ধরনের স্ট্রোক। এর পর তো সিটি স্ক্যান করলে নিশ্চিত হওয়া যায়। হেমোরেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসা কিন্তু পুরোপুরি আলাদা। এখানে প্রথম অবস্থায় আমরা লাইফ সাপোর্ট চিকিৎসা দেই। পাশপাশি আমরা সিটি স্ক্যান করে দেখি হেমোরেজের পরিমাণ কি অনেক কি না। যদি রক্তক্ষরণের পরিমাণ অনেক থাকে, যদি সেটি চাপ তৈরি করে, তাহলে আমরা দ্রুত কিছু ওষুধপত্র দিয়ে চিকিৎসা করি প্রেশার কমানোর জন্য। যদি দেখা যায় যে উন্নতির লক্ষণ হচ্ছে, তাহলে তো ভালো। সেই চিকিৎসা আমরা দেই। আর যদি দেখা যায় অজ্ঞানের মাত্রা বেশি খারাপ হয়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি রোগী খুব দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছে, তখন আমরা সার্জিক্যাল ইন্টারভেনশন করি। মাথায় রক্তক্ষরণ যেটি হয়েছে সেটি আমরা মাথা কেটে রক্ত বের করে কিছুটা স্বাস্তি দেওয়ার জন্য চেষ্টা করি। এই ক্ষেত্রে রোগীর উন্নতি হয়।
প্রশ্ন : চিকিৎসা নির্ভর করবে কীসের ওপর? এর পরে কি সার্জারির কোনো প্রয়োজন রয়েছে?
উত্তর : খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আসলে ইসকেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসা কনজারভেটিভ। সাধারণত ওষুধ দিয়ে, চিকিৎসা দিয়ে আমরা চেষ্টা করি। এটাতে সাধারণত সার্জারি খুব কম ক্ষেত্রেই লাগে।
মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলের যে শিরাগুলো থাকে সেটি ঘাড়ের থেকে মাথার দিকে যায়। এগুলো অনেক সময় স্টেনোসিস থাকে। আমরা অনেক সময় কালার ডপলার করলে, আল্ট্রাসোনোগ্রাম করলে, আল্ট্রাসাউন্ড করলে বুঝতে পারি তার স্টেনোসিসের মাত্রাটা কতটুকু।
প্রশ্ন : স্টেনোসিস মানে কী?
উত্তর : স্টেনোসিস মানে রক্তনালি চিকন হয়ে যাওয়া। সরু হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা দিচ্ছে। এ রকম ধরা পড়লে আমরা ক্যারোটিক স্ট্যানটিং বলি। হার্টে যেমন স্ট্যানটিং করা যায়, ক্যরোটিক আর্টারিতে স্ট্যানটিং করা যায়, বাইপাস করা যায়। এগুলো করার পর পুরোপুরি সুস্থ জীবন যাপনে ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক।