উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে নিরাপত্তা পরিষদ
হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালানোর জন্য শিগগিরই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এই পরীক্ষার নিন্দা জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ বলছে, এটি আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য স্পষ্ট হুমকি।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার আহ্বানে গতকাল বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের বর্তমান প্রধান এলবিও রোসেলি বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলো আগেই জানিয়েছিল, উত্তর কোরিয়া যদি আবারো পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায়, তাহলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই প্রতিশ্রুতি অনুসারে এবং আইন লঙ্ঘনের মাত্রা দেখে, নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে মান অনুযায়ী উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মোতোহিদে ইওশিকাওয়া বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ প্রশ্নের মুখে পড়বে।
২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটি উত্তর কোরিয়ার চালানো চতুর্থ পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা। তবে এবারই প্রথম হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালাল দেশটি।
তবে শুধু পরীক্ষামূলক এই বিস্ফোরণের মাত্রা অনেক বেশি ছিল বলে প্রশ্ন তুলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল বুধবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক ঘোষণায় হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করা হয়। স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। ওই ঘোষণায় আরো বলা হয়, এর মাধ্যমে বিশ্বের পরমাণু শক্তিধর উন্নত দেশগুলোর কাতারে পৌঁছেছে উত্তর কোরিয়া।
হাইড্রোজেন বা থার্মোনিউক্লিয়ার বোমায় ফিউশন বিক্রিয়ার কারণে যে বিস্ফোরণ ঘটে, তা ইউরেনিয়াম বা প্লুটোনিয়ামের ফিশন বিক্রিয়ার চেয়েও শক্তিশালী। হাইড্রোজেন বোমার অপর নাম ‘থার্মোনিউক্লিয়ার ডিভাইস’। একে বলা হয় দ্বিতীয় প্রজন্মের আণবিক বোমা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত আণবিক বোমাগুলোকে বলা হয় প্রথম প্রজন্মের, যেখানে ছিল একটি মাত্র বিস্ফোরণ ব্যবস্থা। তবে দ্বিতীয় প্রজন্মের আণবিক বোমায় থাকে দুটি বিস্ফোরণ ব্যবস্থা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ ভাগে জাপানের হিরোশিমায় ফেলা যুক্তরাষ্ট্রের আণবিক বোমায় একটি মাত্র বিস্ফোরণ ব্যবস্থা ছিল। বোমাটি ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শক্তি নির্গত করেছিল। অন্যদিকে হাইড্রোজেন বোমায় দুটি বিস্ফোরণ ব্যবস্থা থাকায় আরো বেশি এলাকাজুড়ে এর শক্তি ছড়িয়ে পড়বে। এ কারণে প্রথম প্রজন্মের আণবিক বোমার চেয়ে হাইড্রোজেন বোমার বিধ্বংসী ক্ষমতা কয়েকগুণ বেশি।
উত্তর কোরিয়ার বোমা বিস্ফোরণের স্থলে কিছুটা ভূকম্পন দেখা দেওয়ায় হাইড্রোজেন বোমায় ফিশন বিক্রিয়া ঘটানোর কোনো ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।