এক সময় নুন ভাতের কষ্ট হতো, এখন মানুষের চাহিদা মাংসে চলে এসেছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এক সময় এদেশের মানুষের নুন ভাতের কষ্ট হতো, এখন মাংস পাচ্ছে না, এই কথা হচ্ছে। মানুষের চাহিদা মাংসে চলে এসেছে। মাংসের দাম বেড়েছে এটা সত্য। তবে, আমরা মানুষের মাংসের চাহিদা বাড়াতে পেরেছি।’
আজ শুক্রবার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের দিন বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালে ২৩ জুন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণকে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করে দিয়েছে। এ ছাড়া ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পরে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। গ্যাস বিক্রির চাপ ছিল। আমি বলেছি এই গ্যাস জনগণের। এই গ্যাস বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। আমরা চাইনি, কিন্তু মুচলেকা দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি (খালেদা জিয়া) মুচলেকা দিলেন গ্যাস দেবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এমন কথাও শুনতে হয়েছে আওয়ামী লীগ ১০০ বছরে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সে সময় বিএনপি ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল। কিন্তু এই দেশের মানুষ এটা মেনে নেয়নি। ১৯৯৬ সালে ভোট চুরির কারণে বিএনপিকে একবার জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছিল। এরপরে, ২০০৮ সালের নির্বাচন হয় এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড- ১৯ যদি না হতো, তাহলে আমরা প্রবৃদ্ধি আট ভাগে উন্নীত করতে সমর্থ হয়েছিলাম। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয় । সারা বিশ্বব্যাপী বর্তমানে খাদ্য ঘাটতি চলছে। মূল্য বৃদ্ধি শুধু দেশে না, যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এক সময় এদেশের মানুষের নুন ভাতের কষ্ট হতো, এখন মাংস পাচ্ছে না, এই কথা হচ্ছে। মানুষের চাহিদা মাংসে চলে এসেছে। মাংসের দাম বেড়েছে এটা সত্য। তবে, আমরা মানুষের মাংসের চাহিদা বাড়াতে পেরেছি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা বাঙালি শিক্ষা-দীক্ষা সবদিক থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিদের চেয়ে অগ্রগামী ছিলাম। সবসময় আমাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হতো। ৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জয়লাভ করে। কিন্তু বেশি দিন প্রাদেশিক ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। যে অল্প কয়েকদিন ক্ষমতায় ছিল, সে সময়ের মধ্যে শেরা বাংলা যে সরকার গঠন করেছিলেন তার মন্ত্রিসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একজন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিরপুর সিরামিকের কথা আপনারা জানেন, সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ করার পরামর্শ তখন কাবানি গ্রুপকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৫৭ সালে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় সিনেমা শিল্প নিয়ে আইন পার্লামেন্টে তোলেন এবং সেটা পাস করান। ঢাকা বিদ্যুৎ বোর্ড, ঢাকা ওয়াসা এবং তেজগাঁও শিল্প নগর সবই কিন্তু আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে তখন হয়েছে। তার বাদে কিছু হয়নি। শুধু তাই নয়, ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া এবং শহীদ মিনার নির্মাণ করার প্রকল্প আওয়ামী লীগই শুরু করেছিল। আমরা যখন ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করি তখন ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃত অর্জন করে।’
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, সদস্য বেগম আক্তার জাহান, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ।