অতি দ্রুত অবস্থা পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে : শামসুজ্জামান দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘মানুষ রাস্তায় নেমে লড়াই-আন্দোলন করছে, এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। অতি দ্রুত অবস্থা পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দেশের মানুষ এখন বিশ্বাস করে, এই সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।’
আজ রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘আমার দেশ আমার অধিকার’ নামে এক সংগঠনের মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘যে দেশের জন্য মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছে, এক সাগর রক্ত দিয়েছে। সেই দেশে ৫২ বছর পরে এসে মানুষকে ভোটের অধিকারের কথা বলতে হচ্ছে। তারা নিজের ভোট দিতে পারছেন না। মানুষ পছন্দের প্রতিনিধিকে জয় করার ক্ষমতা রাখেন না। আর তাই মানুষ রাস্তায় নেমেছে, লড়াই করছে, আন্দোলন করছে—এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হতাশ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসে বলছেন—তার ছেলের বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান যদি নিয়ে নেয়, তাতেও কিছু যায় আসে না। এটা কেমন প্রধানমন্ত্রী? সে কীভাবে বাংলাদেশকে রক্ষা করবে? অন্য কোনো সভ্য দেশে এরকম পরিস্থিতি হলে সঙ্গে সঙ্গে পদত্যাগ করত।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন—তিনি ভালো নেই। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে পরোক্ষভাবে বোঝা যায়, তিনি দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারছেন না। যদি না-ই পারেন, তাহলে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করুন। দেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেই সংকট থেকে দেশকে মুক্ত করুন।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রকামী বিশ্বকে ধন্যবাদ জানাই, তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমরা ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডাকে ধন্যবাদ জানাই। তারা বাংলাদেশের মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষে দাঁড়ায়নি। এদেশের মানুষের ভোটের অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। যেমন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদেরকে জায়গা দিয়েছিলেন। সে সময় তারা গণতন্ত্রের পক্ষ নিয়েছিল। বর্তমানে ভারত যে অবস্থানেই থাকুক না কেন, সেই সময় তারা গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল, সেজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মাতা, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, যিনি কখনো নির্বাচনে হারেননি, তিনি হলেন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে এ সরকার বন্দি করে রাখবে আর বড় বড় কথা বলবে, এটা দেশের জনগণ মানবে না। অবিলম্বে দেশমাতাকে মুক্তি দিতে হবে। দেশনায়ক তারেক রহমানের সব মামলা প্রত্যাহার করে তাকে দেশে আসার সুযোগ করে দিতে হবে।’
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘দেশনায়ক তারেক রহমান হাজার হাজার মাইল দূরে থেকে গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করছেন। এখন দেশের মানুষ বিশ্বাস করে, এই সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ ও দেশের সব বিরোধীদল এই সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। একটি সত্য ব্যাপার হলো—অতি দ্রুত অবস্থা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, ‘আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামি। দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শেখ সাখাওয়াত তানজিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সহসম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, সাবেক এমপি অধ্যক্ষ নুর আফরোজ জ্যোতি, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের সভাপতি মোক্তার আখন্দসহ অন্যান্যরা।