সবকিছুই জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পুরোটাই হয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজময়। বিকেলে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেয়েরা। আর রাতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ছেলেদের আসরের শিরোপাটাও নিজেদের করে নিল ক্যারিবিয়ানরা। টি-টোয়েন্টির প্রথম দল হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ শিরোপাজয়ের অনন্য কৃতিত্বও অর্জন করেছেন স্যামি-গেইলরা। এর আগে ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল প্রথম শিরোপা।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের আশা হয়তো ছেড়েই দিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু চার বলে চারটি ছয় মেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দারুণ এক জয় এনে দিলেন কার্লোস ব্রেথওয়েট। ডোয়াইন ব্রাভোর ‘চ্যাম্পিয়ন চ্যাম্পিয়ন’ গানটাকেও দিলেন যথার্থতা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্দান্ত এই জয়ের প্রধান নায়ক অবশ্য মারলন স্যামুয়েলস। ২০১২ সালের ফাইনালের মতো আজও দারুণভাবে জ্বলে উঠেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও ৬৬ বলে ৮৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন স্যামুয়েলস। ‘চ্যাম্পিয়ন চ্যাম্পিয়ন’ গানটির রচয়িতা ব্রাভোও ২৫ রানের সময়োপযোগী ইনিংস খেলে বড় ভূমিকা রেখেছেন দলকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর পেছনে। মূলত এই তিনজনের ব্যাটে ভর করেই উইন্ডিজ পেরিয়েছে ১৫৬ রানের বাধা। আর কোনো ব্যাটসম্যানই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের কোটা।
১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপের মুখে পড়েছিল ড্যারেন স্যামির দল। ব্যাট হাতে ৫৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলার পর বল হাতেও দারুণভাবে জ্বলে উঠেছিলেন জো রুট। দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে আউট করেছেন দুই ওপেনার চার্লস ও গেইলকে। ১ রান করে ফিরেছেন চার্লস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে শতক হাঁকানো গেইল ফাইনালে করতে পেরেছেন মাত্র ৪ রান। সেমিফাইনালের নায়ক সিমন্সও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি উইকেটে। তৃতীয় ওভারে ডেভিড উইলির শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন রানের খাতা না খুলেই। চতুর্থ উইকেটে ৭৫ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন মারলন স্যামুয়েলস ও ডোয়াইন ব্রাভো। এই জুটিটাই মূলত গড়ে দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের ভীত। ১৪তম ওভারে ২৫ রান করে ব্রাভো আউট হয়ে গেলে আবারও চাপের মুখে পড়ে উইন্ডিজ। ১৬তম ওভারে আন্দ্রে রাসেল ও অধিনায়ক ড্যারেন স্যামিকে আউট করে ইংল্যান্ডকে জয় দেখিয়েছিলেন উইলি। কিন্তু শেষপর্যায়ে বিধ্বংসী ব্যাটিং করে জয় ছিনিয়ে এনেছেন ব্রেথওয়েট ও স্যামুয়েলস। ১০ বলে ৩৪ রানের অসাধারণ ইনিংস এসেছে ব্রেথওয়েটের ব্যাট থেকে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ইংল্যান্ডও পড়েছিল চাপের মুখে। ২৩ রান সংগ্রহ করতেই হারিয়েছিল তিনটি উইকেট। তবে জো রুট, জস বাটলার ও ডেভিড উইলির ব্যাটে ভর করে স্কোরবোর্ডে জমা করেছে ১৫৫ রান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেছেন দারুণ ফর্মে থাকা রুট। ৩৬ রান এসেছে বাটলারের ব্যাট থেকে। আর ১১১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ডেভিড উইলি খেলেছেন ২১ রানের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন ডোয়াইন ব্রাভো ও কার্লোস ব্রেথওয়েট।