বিমানবন্দরে চার দেশের সমন্বিত নিরাপত্তা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সমন্বয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে সমন্বিত নিরাপত্তাবলয়। আর নিরাপত্তাব্যবস্থার অগ্রগতি পরিদর্শনে যুক্তরাজ্যের কাছে আরো এক মাস সময় চাওয়া হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এক সাক্ষাৎকারে এনটিভিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ পুরোপুরি না কাটলেও ঠিকপথে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। তবে বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বিদেশি সংস্থার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে দেশের সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় উদ্বেগ জানিয়ে ৮ মার্চ যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ থেকে কার্গো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সমাধানের উদ্যোগ হিসেবে ২১ মার্চ যুক্তরাজ্যের একটি নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। তার পর থেকে বিমানবন্দরে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। এর মাঝে ৩১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে নিরাপত্তা কার্যক্রম নিয়ে কথা বলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সমন্বিত নিরাপত্তাবলয়ের প্রস্তাব দেয়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এনটিভিকে বলেন, “এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবের কথা আমরা বলেছি। একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং’ গ্রুপ হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া থাকবে।” কাজ সম্পন্ন হওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘হয়তো বছরখানেক বা বছর দুয়েকের মধ্যেই হয়ে যাবে।’
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরাপত্তায় আধুনিকীকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নিষেধাজ্ঞা ওঠায়নি যুক্তরাজ্য। এ অবস্থায় সমন্বিত নিরাপত্তাবলয় গ্রহণের আগে, এর সময়সীমা ও কাজের পরিধি সুস্পষ্ট করার তাগিদ এই বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ রকিব সিদ্দিকী এনটিভিকে বলেন, কীভাবে সিকিউরিটিকে ডেভেলপ করা হবে, তা ঠিক করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘বাইরের এজেন্সি দিয়ে তো হয় না, কারণ এটি আমাদের ব্যাপার। সমন্বিত যদি কিছু হয়ও সেটি হবে আমাদের একটি বাহিনী বা ব্যবস্থাপনাকে গড়ে তোলার জন্য।’
এদিকে বিদেশি এয়ারলাইন্সদের সংগঠন বোর্ড অব এয়ারলাইন্স রিপ্রেজেন্টেটিভের মতে, সাম্প্রতিক উদ্যোগে সন্তুষ্ট তারা। সংগঠনটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হানিফ জাকারিয়া এনটিভিকে বলেন, ‘ধীরে ধীরে এর ওপর কাজ হচ্ছে। এখনো শেষ হয়নি। তবে এটি সঠিক পথেই আছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাঁর অভিজ্ঞতা বলে যেভাবে কাজ হচ্ছে একসময় সমস্যা দূর হবে।’
বিদেশি নিরাপত্তা সংস্থার ওপর নির্ভরশীল না থেকে ধীরে ধীরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোরও তগিদ দিয়েছেন বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।