ঢাবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের গায়েবানা জানাজা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি চত্বরে সামনে গায়েবানা জানাজা আদায় করেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল সারাদেশে নিহত ছয়জনের স্মরণে আজ বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে ছয়টি কফিন সামনে রেখে জানাজা আদায় করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ না করার বিষয়ে অনড় থাকার ঘোষণা দেন তারা। এদিকে শাহবাগ এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ অবস্থান নিয়ে মিছিল সমাবেশ করছে। এ সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন দেখা যায়। কাউকে পরিচয়পত্র দেখানো ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র ও জনতার ব্যানারে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন নিখিলসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত রয়েছেন। জানাজার পর তাঁরা সেখানেই অবস্থান করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে বের হওয়ার সময় তাঁদের মুঠোফোন তল্লাশি করা এবং মারধর করতেও দেখা গেছে। বেলা তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার মধ্যে অন্তত তিনজনকে মারধর করা হয়। তাঁদের দুজনকে পুলিশ রক্ষা করে। এজন দৌড়ে শাহবাগ থানার মধ্যে ঢুকে যান।
আজ বুধবার (১৭ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি আজ সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে। তাঁদের ধরে ধরে মারধর করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশে আন্দোলনকে কেন্দ্র হামলা, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় ছয়জন মারা যান, যার মধ্যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীও আছেন। গতকাল রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর করেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়।
আজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে প্রত্যেকের পরিচয়পত্র যাচাই করা হচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া বহিরাগত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।
বেলা দুইটার পর ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বেশিসংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকা এবং উপাচার্যের বাসভবনের সামনে। উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। এর আগে দুপুরে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে একটি সমাবেশ হয়।