বিচার বিভাগকে করায়ত্ত্বের চেষ্টা চলছে

আওয়ামী লীগ সরকার সাধারণ মানুষের আশা-ভরসার শেষ স্থান বিচার বিভাগকে করায়ত্ত্ব করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ এ মন্তব্য করেন। বিএনপির ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘সাধারণ মানুষের আশা-ভরসার শেষ স্থান বিচার বিভাগ। সেটাও তাঁরা (আওয়ামী লীগ) করায়ত্ত্ব করার চেষ্টা করছে। প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতি আওয়ামী লীগের আমলেই নিয়োগপ্রাপ্ত, তাঁরা দেশের অবস্থা, রাষ্ট্রের এবং জনগণের অবস্থা বিবেচনা করেই এমন রায় দিয়েছেন। বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাওয়া মানে দেশ ধ্বংস হয়ে যাওয়া।’
আজকে গণতন্ত্র আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দি বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
আওয়ামী লীগ সরকারকে ফ্যাসিস্ট আখ্যায়িত করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আল্লাহর কাছে ভুল করলে ক্ষমা পাওয়া যায়, কিন্তু রাজনীতিতে ভুল করলে পার পাওয়া যায় না। এখন আর এই সরকার কোনো রকম বৈধ নয়। সময় আর বেশি দেরি নাই। এ দেশের জনগণই আপনাদের পদত্যাগ চাইবে।’
‘ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জনগণের মনের কথাই প্রকাশিত হয়েছে। গণতন্ত্র, সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অশ্রদ্ধা করার কারণে জনগণের আদালতেই আপনাদের বিচার হবে।’
ষোড়শ সংশোধীনর বাতিলের রায়ে আওয়ামী লীগের গায়ে আগুন লেগেছে মন্তব্য করে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ বলেন, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা যে যা বলছে তা আদালত অবমাননার শামিল।
এ সময় সরকারের এক মন্ত্রী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করে রায় পাল্টানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করেন বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো নাটক করে বিনা নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে। কিন্তু এমন নির্বাচন আর হতে দেওয়া হবে না।
আলোচনায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে সৈনিক হিসেবে সফল উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান কোনো সাধারণ মানুষ ছিলেন না। তিনি ছিলেন সৈনিক জিয়া, তিনি সৈনিক হিসেবে সর্বোচ্চ সফলতা অর্জন করেছিলেন। দিকনির্দেশনাহীনভাবে এই জাতি যখন নিমজ্জিত ছিল, সেই সময় এই অপরিচিত এবং অখ্যাত জিয়া জেড ফোর্স গঠন করে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।’
‘আধুনিক স্বনির্ভর বাংলা গড়ার জন্য তিনি দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছিল এই আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরো বলেন, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদও জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। কিন্তু যখন বিএনপি প্রতিষ্ঠা হয়নি তখন বিএনপি না থাকার কারণে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে টেকসই উন্নয়ন হবে না- এটা জিয়াউর রহমানই প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।