রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে কঠোর প্রচেষ্টা নেওয়ার আহ্বান জাপানের
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে নিজেদের ভূমি রাখাইন রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে মিয়ানমার সরকারকে আরো কঠোর প্রচেষ্টা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো।
সম্প্রতি নেপিডোতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির সঙ্গে এক বৈঠকে তারো কোনো বলেন, জাপান সরকার মিয়ানমারকে ‘যতটুকু সম্ভব’ ততটুকু উৎসাহ এবং অনুরোধ জানিয়ে যাবে। এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের নেতাদের সঙ্গে আলাপের আগে বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশনকে ‘স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে’ পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের ভূমিকা পালনের প্রতিও তিনি জোর দেন।
উত্তর রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও এ সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত করতে মিয়ানমার সরকার গত বছরের ৩১ মে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয়।
সু চির সঙ্গে বৈঠকে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন।
উভয় নেতা রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করেন এবং বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা নিয়ে কথা বলেন।
তারো কোনো আশা প্রকাশ করেন যে স্বাধীন তদন্ত কমিশনের কাজসহ অন্যান্য উদ্যোগ বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকার তাদের প্রচেষ্টা ‘দ্রুততর’ করবে।
অন্যদিকে, বৈঠকে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর রোহিঙ্গা সমস্যাকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার ‘দ্বিপক্ষীয় ইস্যু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং তা সমাধানে জাপানের সদয় প্রস্তাবের প্রশংসা জানান।
তারো কোনো কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতাও বিনিময় করেন। তিনি প্রায় দুই ঘণ্টা রোহিঙ্গা শিবিরে ছিলেন।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশির ভাগই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চুক্তি সই করে। পরে দুই দেশ ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে চুক্তি করে।
‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ অনুযায়ী, প্রত্যাবাসন শুরুর দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের ফেরার কথা ছিল গত বছরের ১৫ নভেম্বর। কিন্তু রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।