নেত্রকোনায় পরকীয়ার জেরে গৃহবধূ শরীফা হত্যাকাণ্ড, আসামি গ্রেপ্তার
নেত্রকোনায় গৃহবধূ শরীফা আক্তার (৩২) হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ আসামি সুভাষকে (৩৭) গতকাল সোমবার গ্রেপ্তার করেছে নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ।
গত শুক্রবার দিবাগত রাতে গৃহবধূ শরীফা খুনের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর নিহত শরীফার বোন হীরামন ওরফে আঙ্গুরা বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
নেত্রকোনা জেলা পুলিশ সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, ২১ আগস্ট সকালে খবর পেয়ে পুলিশ নেত্রকোনা সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের কাংশা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী রিপন মিয়ার বসতঘর থেকে তার স্ত্রী শরীফা আক্তারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসীর তত্ত্বাবধানে ও দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোরশেদা খাতুনের সহযোগিতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হুদা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মৃত শরীফার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকাজ শুরু করেন।
তদন্তকালে কর্মকর্তা জানতে পারেন নিহত শরীফার স্বামী রিপন মিয়া বিদেশে অবস্থান করায় তারই বন্ধু সুভাষের দোকানে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করার সুবাধে তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে শরীফা সুভাষকে বিয়ের জন্য ব্যাপক চাপ দেন।
সুভাষের স্ত্রী ও সন্তান থাকায় তিনি দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। সামাজিক ও পারিবারিক মানসম্মানের কথা চিন্তা করে সুভাষ শরীফাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক সুভাষ গত ২০ আগস্ট গভীর রাতে সিঁধ কেটে ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত শরীফার গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
পুলিশ গতকাল সোমবার দুপুরে কাংশা বাজারের দোকানঘর থেকে সুভাষকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেন এবং তার দেখানো মতো নিজ বাড়ির গোবরের টাল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি আলামত হিসেবে জব্দ করে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্ত সুভাষকে আদালতে পাঠালে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।