‘স্করপিয়ন কিক’ আজও ভোলেননি হিগুইতা!

তাঁকে সবাই ডাকত ‘এল লোকো’ বলে। এই স্প্যানিশ শব্দের অর্থ ‘পাগল মানুষ’। খ্যাপাটেও বলা যেতে পারে তাঁকে। নইলে কি আর গোলপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে বল সহজভাবে হাত দিয়ে ধরে ফেলার বদলে পা দিয়ে শট মারতে যান? সেটাও আবার স্বাভাবিক শট নয়। শরীরটা উল্টো দিকে ঘুরিয়ে, পায়ের পাতা দিয়ে চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো কিক। ফুটবল বিশ্বে যা পরিচিত হয়ে আছে ‘স্করপিয়ন কিক’ নামে। সেই ‘খ্যাপাটে’ মানুষটির নাম রেনে হিগুইতা।
২০ বছর আগে, ১৯৯৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সেই অদ্ভুত শটের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। লন্ডনের ওয়েম্বলিতে সেদিন এক প্রীতি ম্যাচে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল কলম্বিয়া। পেনাল্টি বক্সের বেশ বাইরে থেকে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের মিডফিল্ডার জেমি রেডন্যাপ। হাওয়ায় ভেসে আসা বলটা ধরে ফেলতে পারতেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক হিগুইতা। কিংবা ফিস্ট করতেও পারতেন। কিন্তু তার বদলে তিনি যা করেছিলেন তা বিশ্বাস করাই মুশকিল। সেই অবিশ্বাস্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা হয়তো গায়ে চিমটি কেটে বুঝতে চেয়েছিলেন স্বপ্ন দেখছেন কি না! পোস্টে ধেয়ে আসা বল অদ্ভুত ঢঙে শরীর ঘুরিয়ে বিপদমুক্ত করার চিন্তা কীভাবে একজন গোলরক্ষকের মাথায় আসতে পারে, তা ভেবে অবাক না হয়ে উপায় নেই।
হিগুইতা এখন সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসেরের কোচের দায়িত্বে আছেন। আলোচিত ‘স্করপিয়ন কিকের’ ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আবারও সেটি করে দেখিয়েছেন তিনি। মাঠে নয় অবশ্য। সুইমিং পুলের সামনে তাঁর দিকে ছুঁড়ে দেওয়া বল ‘স্করপিয়ন কিক’ দিয়ে দূরে পাঠিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন পানিতে।
হিগুইতার এমন কাণ্ড হয়তো অনেকেই সমর্থন করতে পারবেন না। বিশেষ করে গোলরক্ষকরা। কিন্তু ২০ বছর আগের সেই অদ্ভুত কিক দিয়ে ফুটবল-ইতিহাসে একটা আলাদা জায়গা করে নিতে পেরেছেন তিনি। হিগুইতা সম্পর্কে আরেকটি তথ্য না দিলেই নয়। গোলরক্ষক হলেও প্রায়ই ফ্রিকিক নিতেন তিনি। মাঝে-মাঝে পেনাল্টিও। কলম্বিয়ার জার্সি গায়ে ৬৮ ম্যাচ খেলে তিনটি গোলও করেছিলেন তিনি।