ইরাকের নাজাফে ইরানি কনস্যুলেটে আবারও বিক্ষোভকারীদের আগুন
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাকের নাজাফ শহরের ইরানি কনস্যুলেটে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা আগুন দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইরাকের টিভি চ্যানেল সুমারিয়া নিউজের বরাত দিয়ে ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে এ খবর জানিয়েছে।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গতকাল রোববার রাতে ইরানি কনস্যুলেটে আবারও আগুন দেওয়া হয়। নাজাফের নগর উন্নয়ন বিষয়ক অধিদপ্তর এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছে, ফায়ার ব্রিগেডের কয়েকটি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর রাতে বিক্ষোভকারীদের ভেতর থেকে একটি দল ‘ইরাক থেকে ইরান দূর হোক’ স্লোগান দিতে দিতে নাজাফের ইরানি কনস্যুলেট ভবনের চত্বরে ঢুকে পড়ে এবং পুরো ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরদিন সকালে ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঘোষণা করে, ইরাকের কিছু উগ্র গোষ্ঠী বিদেশি ষড়যন্ত্রে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘোষণায় বলা হয়, ইরাকি কনস্যুলেটে হামলাকারীরা নাজাফ শহরের অধিবাসী নয়।
এ নিয়ে চলতি মাসে তৃতীয়বারের মতো কোনো ইরানি কনস্যুলেটে হামলা হলো। এর আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ইরাকের পবিত্র কারবালা শহরে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। ওই কনস্যুলেট ভবন থেকে ইরানের পতাকা নামিয়ে টাঙানো হয় ইরাকের পতাকা। এ সময় ভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও আশপাশের রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়ে পুলিশ।
এক বছরের কিছু বেশি সময় আগে প্রয়োজনীয় পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হন আদেল আবদেল মাহাদি। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই কর্মসংস্থানের সংকট, নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত ১ সেপ্টেম্বর ইরাকের রাজধানী বাগদাদের রাজপথে নামে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কয়েক সপ্তাহ ধরে ইরাকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়ে বিক্ষোভাকারীদের ওপর চড়াও হলে এই বিক্ষোভ আরো জোরালো হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে ইরাকের বিভিন্ন শহরে। এদিকে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মাহাদিকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা ইরান প্রতিহত করছে, এমন অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের।
দুই মাস ধরে চলমান বিক্ষোভে ইরাকে অন্তত সাড়ে তিনশ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।