করোনা ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেক
যৌথভাবে নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করার পর, এবার প্রতিষেধকটির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (এফডিএ) কাছে আবেদন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফাইজার এবং জার্মানির জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক। এফডিএর কাছে এই প্রথম কোনো করোনা ভ্যাকসিনের জরুরি প্রয়োগের ছাড়পত্র চাওয়া হলো। সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি ফাইজার কয়েকদিন আগে জানিয়েছিল, তাদের তৈরি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা পর্যালোচনা সম্পন্ন হয়েছে।
এক ভিডিও বার্তায় গতকাল ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালবার্ট বুরলা বলেছেন, ‘অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে এবং কিছুটা স্বস্তির সঙ্গে জানাচ্ছি যে কোভিড-১৯-এর জরুরি প্রয়োগের অনুমোদনের জন্য আমরা এফডিএর কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। অনুমোদনের বিষয়টি এখন তাদের হাতে।’
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘আজ এক ঐতিহাসিক দিন। আজ বিজ্ঞানের জন্য এবং আমাদের সবার জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। বায়োএনটেকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের ভ্যাকসিন তৈরির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা দেওয়ার কেবল ২৪৮ দিনের মাথায় এফডিএর কাছে (ভ্যাকসিনের জরুরি প্রয়োগের) জন্য অনুমতি চাওয়া হলো।’
‘ভ্যাকসিনটি তৈরির শুরু থেকে আজ অনুমতি চাওয়া পর্যন্ত—আমরা সবসময় সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ভ্যাকসিনটি তৈরির ক্লিনিক্যাল কার্যক্রম পরিচালনা করেছি’, যোগ করেন ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
ফাইজার-বায়োএনটেকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এফডিএ গতকাল জানিয়েছে, ভ্যাকসিনটির জরুরি প্রয়োগের অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের উপদেষ্টা প্যানেল আগামী ১০ ডিসেম্বর বৈঠকে বসবে। এফডিএর এক সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, উপদেষ্টা প্যানেলের বৈঠক শেষে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের জরুরি প্রয়োগের অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
এর আগে গত বুধবার ফাইজার তাদের তৈরি ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে ঘোষণা করে। তারা জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ভ্যাকসিনটি তৈরি করছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আরেক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মডার্না গত সোমবার ঘোষণা করেছিল, তাদের তৈরি করোনার ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা গেছে প্রতিষেধকটি ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ কার্যকর। এ ছাড়া মডার্না আরো জানিয়েছে, নিজেদের ভ্যাকসিনের আরো সুরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পর চলতি মাসের মধ্যে তারাও এফডিএর কাছে টিকার জরুরি প্রয়োগের অনুমতির আবেদন করবে।
মডার্না ও ফাইজার তাদের ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে একই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। ফলে চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা শেষে উভয় টিকার একই সুরক্ষা তথ্য পাওয়া গেছে। তাই উভয় আবেদনই গ্রহণযোগ্য হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।