মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চিরস্থায়ী মানবাধিকার সংকট তৈরি করেছে : জাতিসংঘ
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে চিরস্থায়ী মানবাধিকার সংকট সৃষ্টি করছে। আজ শুক্রবার (৩ মার্চ) জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটি দাবি করা হচ্ছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সহিংসতা বন্ধের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। খবর রয়টার্সের।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলে নেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে আন্দোলন করছে গণতন্ত্রপন্থীরা। বিশৃঙ্খলায় রয়েছে দেশটি। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে পশ্চিমারা।
আজ জাতিসংঘ যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমারের কতটুকু মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ী অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বিরোধীদের দমনে বিমান ও আর্টিলারি শেল দিয়ে হামলা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। মানুষদের বাস্তচ্যুত করতে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়েছে তারা। এমনকি, মানবাধিকার কর্মীদের ওইসব এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি সেনাবাহিনী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধীগোষ্ঠীগুলো যেন খাদ্য ও অর্থ জোগাড় করতে না পারে, সেজন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই কৌশল ব্যবহার করেছে। বিরোধী গ্রুপগুলোতে যেন নতুন করে কেউ না জড়িয়ে যায় ও তারা যেন তথ্য সংগ্রহ করতে না পারে, সেজন্যই এমনটি করেছে সেনাবাহিনী।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না। তারা আমাদের নির্দেশনা মানছে না। দেশটির ভয়াবহ বিপর্যয় অবসান ঘটাতে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
এ বিষয়ে রয়টার্সের মোবাইল ফোন ও মেইলের জবাব দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
বিরোধীদের দমন নিয়ে এর আগে জান্তা সরকার জানিয়েছিল, দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করছে সেনাবাহিনী। নৃশংসতার অভিযোগ অস্বীকার করে তারা বলেছিল, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী বৈধ হামলা চালাচ্ছে।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রধান জেমস রোদেভার বলেন, ‘দেশটির ৭৭ শতাংশ এলাকায় বিরোধীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে।’