গাজীপুর সিটি নির্বাচন : আর মাত্র ১০ দিন
গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আর মাত্র ১০ দিন বাকি। আগামী ২৫ মে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সময় যতই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনি উত্তাপ ততই বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে প্রার্থী, কর্মী ও সমর্থকদের ব্যস্ততা ও অস্থিরতা।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থীরা প্রতিদিন সকাল হতে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়, দোকানপাট, কলকারখানায় ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ করছেন এবং প্রচারপত্র বিতরণ করে ভোট চাচ্ছেন। ফাঁকে ফাঁকে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পথসভা ও বৈঠক করছেন। আবার অনেকে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভোট চাচ্ছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীদের গণসংযোগে যোগ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও।
প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের পদচারণায় গাজীপুর মহানগরীর পুরো এলাকা এখন মুখরিত হয়ে উঠেছে। নির্বাচনের আমেজ ও উত্তাপ নগরীর সীমানা ছেড়ে আশপাশের এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে।
সবার দৃষ্টি এখন মেয়র পদপ্রার্থীদের দিকে। এ নির্বাচনে কে হচ্ছেন পরবর্তী নগর পিতা, কার গলায় ঝুলবে বিজয়ের মালা।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনি প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। তাঁরা মেয়র পদে দলের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে বিজয়ী করতে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় জোরেশোরে কাজ শুরু করেছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে নানা হিসাব নিকাষ করে নির্বাচনি কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
আজ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে সকাল হতে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন। এদিন ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থীর পক্ষে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন।
অপরদিকে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে সমানভাবে পাল্লা দিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনও নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মাকে বিজয়ী করতে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর নিজের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মায়ের পক্ষে কর্মকৌশল তৈরি করে প্রতিদিন মাঠে নামছেন।
প্রার্থীদের গণসংযোগ
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী (নৌকা) আজমত উল্লা খান সকাল হতে দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে পূবাইল থানার হারবাইদ, মেঘডুবি, মীরের বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এসব গণসংযোগে ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনসহ দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা অংশ নেন। দিনভর এ প্রচারণায় দলের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাণের শিক্ষক, কর্মচারী, মসজিদের ইমাম এবং সাধারণ ভোটাররা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যোগ দেন। গণসংযোগকালে তিনি একাধিক স্থানে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য দেন।
পথসভায় নৌকার প্রার্থী গাজীপুরে নৌকার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে ও নগরীর উন্নয়নের স্বার্থে আগামী ২৫ মে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।
টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন মেয়র পদে প্রতিদন্দ্বিতা করছেন। তিনি সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা। আজ তিনি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নগরীর জজ কোর্ট এলাকা হতে গণসংযোগ শুরু করেন। পরে তিনি সদর থানার জয়দেবপুর, শিমুলতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন (লাঙ্গল) রবিবার মহানগরীর সাতাইশ, নৈপাড়া, বড়দেওড়া, মিলগেটসহ টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় দিনভর কর্মী সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি একাধিক পথসভায় বক্তব্য দেন।
হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহ নূর ইসলাম রনি সকাল হতে টঙ্গী পাগাড় এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেন। দুপুর পর্যন্ত তিনি কর্মী সমর্থকদের নিয়ে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। বিকেলে শিমুলতলি ও জয়দেবপুরসহ সদর থানার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান (হাত পাখা) কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নগরীর টঙ্গী পূর্ব ও টঙ্গী পশ্চিম থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। এ সময় তিনি একাধিক পথসভায় বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি নগরীর বিভিন্ন সমস্যা দূর করে নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন।