ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল

Looks like you've blocked notifications!
ঝিনাইদহ পৌরসভা। ছবি : সংগৃহীত

ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে একাধিকবার নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আব্দুল খালেকের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বৃহস্পতিবার ইসির উপসচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক এ প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়সূচি অনুসারে আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেয়র পদপ্রার্থী মো. আবুল খালেক ও তাঁর সমর্থকরা মিছিল-শোভাযাত্রা করে গত ১৮ মে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. কাইয়ুম শাহরিয়ার সাহেদীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে; যা ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আব্দুল খালেক তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদীর প্রচারে বাধা দিয়েছেন। আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব‍্যাখ্যা চাওয়ার পর তিনি ক্ষমা চান। ভবিষ্যতে নিৰ্বাচন আচরণ বিধিমালা মেনে চলবেন বলেও অঙ্গীকার করেন। এরপরও আব্দুল খালেকের সমর্থকেরা গতকাল বুধবার কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী ও তার সমর্থকদের আক্রমণ করে আহত করেন; যা বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওতে প্রকাশ পায়।

এসব কারণে পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১৫ একাধিকবার লঙ্ঘন হওয়ায় আব্দুল খালেকের মেয়র পদে প্রার্থিতা ওই বিধিমালার ৩২ অনুচ্ছেদ অনুসারে বাতিল করা হয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের ধুপাঘাটা নতুন ব্রিজ এলাকায় স্বতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। এ ঘটনায় গোটা পৌর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পাড়ামহল্লায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। 

জানা গেছে, গতকাল ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার পর জেলা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়। হামলার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ। আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে।

সেদিন স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী হিজল অভিযোগ করেন, পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামে জনসংযোগ করে গোবিন্দপুর এলাকায় আসা মাত্র আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আব্দুল খালেকের সমর্থকরা হঠাৎ করে হামলা শুরু করে। এ সময় ইাটপাটকেল নিক্ষেপসহ বেদম মারপিট করা হয় তাদের। একপর্যায়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গুরুতর আহত হন তিনি। এ সময় তার বড় ভাই পিপুলকে বেদম মারধর করতে থাকে হামলাকারীরা।

হিজল আরও অভিযোগ করেন, নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় তার অন্তত পাঁচজন সমর্থক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে নিজস্ব লাইসেন্স করা পিস্তল থেকে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলির কথা স্বীকার করেন তিনি।

ঘটনার রাতে গতকাল এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বলেন, ‘এক পক্ষে ঘটনা ঘটেনি। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়াসহ ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হিজল আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। স্বতন্ত্রপ্রার্থীর লোকজন আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ওপর আগে চড়াও হয়েছে এবং পিস্তলের গুলিবর্ষণ করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, আগামী ১৫ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনে আব্দুল খালেক বাদে মেয়র পদপ্রার্থী ছিলেন তিনজন। তাঁরা হলেন—স্বতন্ত্রপ্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহিদী হিজল, মিজানুর রহমান মাসুম এবং ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম।