নওগাঁর পত্নীতলার চারটি ইউনিয়নের ফলাফল স্থগিত

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁর পত্নীতলার ঘোষনগর ইউনিয়নে দুটি কেন্দ্রের ব্যালট ও সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার সময় পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয় হামলাকারীরা। ছবি : এনটিভি

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ শেষে গণনা না করে দুটি কেন্দ্রের ব্যালট ও সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার সময় পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফারজানা পারভীন এবং ওই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ইউপি সদস্য পদপ্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা এ হামলা চালায়। পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা।

গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়নের কমলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঘোষনগর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ব্যালট ও মালামাল নিয়ে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দুই কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে।

চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফারজানা পারভীন ও কয়েকজন ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী বলেন, ভোট গণনা না করেই ব্যালট ও সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাই বিক্ষুপ্ত জনতা এ ঘটনা ঘটায়। তাঁদের কর্মী-সমর্থকরা এ ধরনের হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল না। পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেটের আঘাতে অন্তত ২০ জন মানুষ আহত হয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও নারীও রয়েছে।

অন্যদিকে উপজেলার পত্নীতলা সদর ইউনিয়নের মথুরাপুর, কৃষ্ণুপুর ইউনিয়নের পানিওড়া ও আকবর ইউনিয়নের মান্দাইন কেন্দ্রেও ভোট গণনা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় জনতার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় ওই তিনটি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থী এবং স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, ভোট গণনা না করেই ব্যালট ও মালামাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গণনা না করে ব্যালট ও মালামাল নিতে জনগণ বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

পত্নীতলা সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এখানে নৌকার প্রার্থীর চেয়ে আমি প্রায় এক হাজার ভোটে এগিয়ে আছি। নৌকার প্রার্থী জিতিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যালট নিয়ে উপজেলা সদরে গিয়ে ফলাফল ঘোষণার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

ভোটের ফলাফল স্থগিত থাকা একটি করে কেন্দ্র ছাড়া বাকি কেন্দ্রগুলোতে কৃষ্ণুপুরে স্বতন্ত্রপ্রার্থী নজরুলল ইসলাম এগিয়ে আছেন। আকবর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুলতান মাহমুদ এগিয়ে আছেন।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, পত্নীতলার উপজেলার চারটি ইউনিয়নের পাঁচটি ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষের কারণে ওই সব ইউনিয়নের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। ওই সব কেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে ভোট নেওয়া হবে। এরপর ওই চারটি ইউনিয়নের ফলাফল ঘোষণা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, দুটি পুলিশ ভ্যানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের রিকুইজিশন করা ভোটের ডিউটিতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বেশ কিছু ব্যালট বাক্সও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। হামলায় পুলিশের বেশ কিছু সদস্য আহত হয়েছেন। সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ফলাফল স্থগিত হওয়া পত্নীতলা উপজেলার ওই চারটি ইউনিয়ন ছাড়া বাকি সাতটি ইউনিয়নের ফলাফলে দুটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) এবং দুটিতে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বিএনপিনেতা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ছাড়া, পোরশা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সাপাহার উপজেলার পাঁচটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও একটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।