গাজীপুর সিটি নির্বাচন

বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আজমতকে ফের তলব, প্রতিমন্ত্রীকে সতর্ক

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান ও প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। ছবি : এনটিভি

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারিসহ আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থীকে ফের ব্যাখ্যা আর যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে সতর্কতার জন্য চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ শুক্রবার (৫ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে একের পর এক নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে সরকারি ছুটির দিনে (বৃহষ্পতিবার) সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক করেছে ইসি।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইসি ভবনে অনুষ্ঠিত ওই জরুরি বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং চার নির্বাচন কমিশনারসহ সচিব ও অতিরিক্ত সচিব উপস্থিত ছিলেন।

সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলকে এবং নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত হয়। নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রার্থীর প্রচারে বৃহস্পতিবারও অংশ নিয়েছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান। এর আগেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ওই দুজনসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে সতর্ক করেন রিটার্নিং অফিসা।

নৌকার মেয়র পদপ্রার্থীকে ইসিতে তলব

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খানকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আপনার পক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ৩০ এপ্রিল ব্যাখ্যা তলব করা হয়। তা সত্ত্বেও ৪ মে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল সভা করে আপনার পক্ষে ভোট চেয়েছেন, যেখানে আপনি উপস্থিত ছিলেন। যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। উল্লেখিত কার্যক্রম সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিপন্থি। আচরণ বিধিমালার বর্ণিত বিধান লঙ্ঘনের জন্য বিধি ৩২ অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আপনাকে ইতোপূর্বে সতর্ক করা সত্ত্বেও প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনি প্রচারণার ফলে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে কেন আপনার (আজমত উল্লা খানের) প্রার্থিতা বাতিল করা হবে না, সে বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে ইসিতে উপস্থিত হয়ে ৭ মে বিকেল ৩টায় ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বলা হলো।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকেও ইসির ফের সতর্কতা

অপরদিকে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে দেওয়া ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিতব্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে ৪ মে প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল সভা করে মেয়র পদপ্রার্থী মো. আজমত উল্লা খানের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। যেখানে প্রার্থী নিজে উপস্থিত ছিলেন, যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। উল্লিখিত কার্যক্রম নির্বাচনি আচরণ বিধিমালার পরিপন্থি। আচরণ বিধিমালার বর্ণিত বিধান লঙ্ঘনের জন্য বিধি ৩২ অনুযায়ী প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের বিধানও আছে।

সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল সভা করে মেয়র পদপ্রার্থী মো. আজমত উল্লা খানের উপস্থিতিতে তার পক্ষে ভোট চেয়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা ২০১৬ লঙ্ঘন করেছেন। বিষয়টি প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের গোচরে নিতে তাঁর একান্ত সচিবকে অনুরোধ করা হলো।

এর আগেও আচরণ বিধি লঙ্ঘনের জন্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে গত ২৯ এপ্রিল চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দলীয় পর্যায়ে তাগাদা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা চিঠি দেওয়ার পরও ইসির নির্দেশনা উপেক্ষিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসি। এ অবস্থায় নির্বাচনি আচরণ বিধি লঙ্ঘনের কারণে জরিমানা, কারাদণ্ড, উভয়দণ্ড এবং সর্বোচ্চ শাস্তি প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে কমিশনের। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের আগে আরেকবার সতর্ক করার জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন।