ভোলার দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২৫

Looks like you've blocked notifications!
ভোলা সদর উপজেলার দুই ইউনিয়নে আ.লীগ ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহতদের কয়েকজন। ছবি : এনটিভি

ভোলা সদর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন ও রাজাপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলামের সমর্থকরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হয়।

এ ছাড়া রাজাপুর ইউনিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রাতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের সমর্থকরা জনতাবাজার এলাকায় মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল হক মিঠু চৌধুরীর দুই কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় হামলাকারীরা ওই দুই কর্মীর পায়ের রগ কেটে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। 

পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে আহতরা হলেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন, তার মেয়ে জান্নাত, ভাই ইব্রাহিম, মানিক, নাজমা, সুজন, মোস্তফা, রাকিব, জাহিদ, সিদ্দিকসহ ২০ জন ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অন্যদিকে, রাজাপুর ইউনিয়ননের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. গিয়াস উদ্দিন ও একই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুস ছালাম হাওলাদারসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তারা ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে  গিয়াস উদ্দিনের দুই পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী।

পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে জান্নাত বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ সকালে আমার বাবা এলাকায় এক জানাজায় গিয়েছিলেন। সেখানে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরের সমর্থকরা আমাদের প্রচারণা চালানোর সময় হামলা চালায়।’

এদিকে, পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলামের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায় তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে, রাজাপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল হক মিঠু চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ‘সকালে আমার কর্মী গিয়াস উদ্দিনসহ অন্যরা জনতা বাজার তার নিজস্ব ওষুধের ফার্মেসিতে বসেছিলেন এবং অপর কর্মী ছালাম হাওলাদার ওই বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। এ সময় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মিজানুর রহমানের উপস্থিতিতে তার কর্মী নাছির সরদার, আলতু ফরাজী, ডিস জামাল, ইকবাল চকিদারসহ ২০ থেকে ২৫ জনের একটি গ্রুপ ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমার এ দুই কর্মীর ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা গিয়াস উদ্দিন ও ছালামকে কুপিয়ে জখম করে এবং পায়ের রগ কেটে দেয়। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাদের মাথা, ঘাড় ও পায়ে গুরুতর জখম হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ 

এদের মধ্যে গিয়াস উদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানান তিনি। 

নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি হামলার বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি আমার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সকাল থেকেই নির্বাচনি প্রচারণায় আছি। আমি খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছুই দেখতে পাইনি।’

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান,  নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোলার রাজাপুর ও পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হয়েছে।’

উল্লেখ্য, আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ভোলা সদর উপজেলা ১২ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।