ময়মনসিংহ-১০ আসন

ফাহমি গোলন্দাজ বাবেলের ২২০, স্ত্রীর ৫০০ ভরি স্বর্ণ

Looks like you've blocked notifications!
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল। ফাইল ছবি

ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল। জন্ম ১৯৭৬ সালের ২৩ জুন। প্রয়াত বাবা সাবেক সংসদ সদস্য আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ। এই আসনে আলতাফ হোসেন তিন বার সংসদ সদস্য ও একবার উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। মা মাহফুজা গোলন্দাজ। বাবেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস।  নানা সময়ে আলোচিত-সমালোচিত তিনি।

ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল বর্তমানে গফরগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৬ সালে জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে  ২০১৮ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ জেলা শাখার কমিটি অনুমোদিত হলে বাবেল কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ লাভ করেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করেন এবং মহাজোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বাবেলের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ২৪ জুন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তাকে মেরে দাঁত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে সেই কর্মকর্তা গফরগাঁও থানায় মামলা করেন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগেগফরগাঁও উপজেলার চেয়ারম্যান থাকার সময় থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্যাডার পালনের অভিযোগ। তার ক্যাডারদের হাতে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সাংবাদিকক লাঞ্ছিত করা ও হামলার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন ময়মনসিংহ-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন তাঁকে হত্যাচেষ্টা চলছে জানিয়ে নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেন; যেখানে হত্যাচেষ্টার তত্ত্বাবধানকারী হিসেবে ফাহমি গোলন্দাজের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল।

ফাহমি গোলন্দাজ ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে নিজ দলের নেতার অনুসারী নেতাকর্মী এবং তাঁর বিরোধিতা করা ব্যক্তিদের ওপর হামলা ও এলাকাছাড়া করার অভিযোগ আছে। এর পরও তিনি তাঁর নির্বাচনি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা ও সুশাসন শত ভাগ বলে দাবি করেছেন তার হলফনামায়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটানিং অফিসারের কাছে দাখিল করা হলফনামায় ফাহমি গোলন্দাজের সম্পদের বিবরণীতে পাওয়া গেছে—তাঁর নামে কোতোয়ালি মডেল  থানায় একটি ও গফরগাঁও থানায় দুটি মামলাসহ মোট তিনটি মামলায় আদালত থেকে অব্যাহতি  পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী।  তাঁর বার্ষিক  আয়ের উৎস হিসেবে কৃষি খাতে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা। বাড়ি ও দোকান ভাড়া বাবদ ১০ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫০ টাকা। নির্ভরশীলদের আয় সাত লাখ ৪৪ হাজার ৭০০ টাকা। ব্যবসা খাতে আয় দুই কোটি ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার ৬৩৬ টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের আয়, ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এমপি হিসেবে সম্মানিভাতা ও পারিতোষিকভাতা ২৩ লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ টাকা। ব্যাংক মুনাফা ১৯ লাখ ৫৭ হাজার ৪৬৩ টাকা। তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৬১ হাজার ৫৮৩ টাকা। তার অস্থাবর সম্পদ, নিজ নামে এক কোটি ৪৮ লাখ ৬৮ হাজার ১২২ টাকা। স্ত্রীর নামে ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ১১ কোটি ৯২ লাখ ৭০ হাজার ৫৭৯ টাকা। স্ত্রীর নামে এক কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার ১৪৫ টাকা। দুটি জিপ গাড়ি,  যার মূল্য এক কোটি ১০ লাখ টাকা। বিবাহকালীন উপহার হিসেবে স্বর্ণ ২২০ ভরি ও স্ত্রীর আরও ৫০০ ভরি স্বর্ণের কথা উল্লেখ করেছেন হলফনামায়। ইলেকট্রোনিক সামগ্রী  টিভি ফ্রিজ এসি ৮০ হাজার টাকা। খাট সোফা ৮০ হাজার টাকা। তাঁদের স্বামী-স্ত্রী দুজনের নামে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে । নিজের আগ্নেয়াস্ত্রের একটি পিস্তল ও একটি শটগান। যার মূল্য ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর নামে একটি পিস্তল ও একটি রাইফেল, যার মূল্য দুই লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদ: কৃষি জমি নিজ নামে ১০ একর যার মূল্য ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। গফরগাঁওয়ের খাউড়ায় এক দশমিক ৪১ একর জমি মূল্য ৩২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। অকৃষি জমি : পৈত্রিক সূত্রে গফরগাঁও এবং ময়মনসিংহে ১৫ একর। নারায়ণগঞ্জে দশমিক ১১ একর। ঢাকার নিকুঞ্জে শূন্য দশমিক ০৩৫ একর। ভালুকা ও ময়মনসিংহে দুই দশমিক ২৬৭৫ একর, মূল্য এক কোটি ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ২০০ টাকা। নিজ নামে গফরগাঁওয়ে বাড়ি ও দোকান ৫৬ লাখ ও ১১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় তিন শতাংশ জমি, ঢাকার গুলশানে ফ্ল্যাট নং ৮/১৩ প্লট নং ৩২ মূল্য দুই কোটি ৪৮ লাখ তিন হাজার ৪৯৫ টাকা এবং রাজউকে প্লট চার কাঠার। পৈত্রিক সূত্রে ৩০ একর ফিশারি। তাঁর কোনো দায়  নেই। জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেয় প্রতিশ্রুতি রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা নির্মাণ ৯০ শতাংশ, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ ৮০ শতাংশ, আইনশৃঙ্খলা ও সুশাসন ১০০ শতাংশ বলে দাবি করেছেন।