জাপার পোস্টারে ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’লেখা নিয়ে আওয়ামী লীগে ক্ষোভ
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নির্বাচনি পোস্টারে ‘জাতীয় পার্টির মনোনীত ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত’লেখা হয়েছে। জাপার পোস্টারে ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’লেখাটি নিয়ে নির্বাচনি এলাকা করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা ও করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করা নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ বলেন, মুজিবুল হক চুন্নুকে এই আসনে আওয়ামী লীগ ছাড় দিয়েছে, সমর্থন দেয়নি। সমঝোতাকে আওয়ামী লীগের সমর্থন মনে করার কারণ নেই। এটা কোনোভাবে আমরা মানতে পারছি না। কাজেই পোস্টারে ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’লেখাটা অন্যায় হয়েছে।
একই সংসদীয় এলাকার তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক মোতাহারও বলেছেন, ‘চুন্নুকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দেয়নি। তার পক্ষে আমরা নির্বাচনি কাজও করছি না। আমরা অপেক্ষায় আছি, আওয়ামী লীগের চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে আলোচনা করে একজন প্রার্থী হলে আমরা তাকে নিয়ে মাঠে নামব। আমরা বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে কথা বলব।’
এ আসনে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহফুজুল হক বলেছেন, ‘বিষয়টি নিয়ে দলের অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করবো।’
পোস্টার প্রসঙ্গে কথা বলতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জাপা প্রার্থী মো. মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে কথা বলতে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি।
তবে জেলা জাতীয় পার্টির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এটি ফালতু বিতর্ক। কারণ সবাই জানে, আসনটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে ঘোষণা না দিলেও সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলীয় সিদ্ধান্ত যদি কেউ না মানেন, সেটা অন্য বিষয়।’
২০০৮ সাল থেকে চুন্নু নৌকায় উঠে সংসদে যাচ্ছেন। কিন্তু এবার সমঝোতার কারণে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করলেও রয়েছেন আওয়ামী পরিবারের চার স্বতন্ত্র প্রার্থী। সমঝোতার কারণে আওয়ামী লীগ এই আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়নি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে সমঝোতা হয়। ফলে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
এই আসনে আওয়ামী পরিবারের অন্য তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক (কাঁচি), কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার গোলাম কবীর ভূঁইয়া (কেটলি) ও মো. রুবেল মিয়া (ট্রাক)।
গোলাম কবীর ভূঁইয়া জানান, এই আসনটি জাতীয় পার্টির কবল থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য স্বতন্ত্র চারজনের মধ্যে থেকে একজনকে রেখে বাকিরা বসে যাবেন। এরকম একটা আলোচনা নিজেদের মধ্যে চলছে।