ঢাকা-২ ও ঢাকা-৩ আসনে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা
নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে সরকার সমর্থিত প্রার্থীরা তত বেশি নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এবার অন্যান্য প্রার্থীদের তেমন কোন ডামাডোল না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরাই প্রচারণায় রয়েছেন শীর্ষ।
ঢাকা-২ ও ঢাকা-৩ আসনের সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীরা প্রতিদিন উঠান বৈঠক, নির্বাচনি সভা-সমাবেশ করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ করছেন। সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তেমন কোন উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা না গেলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মুখে মুখে নির্বাচনি প্রচারণা চলছে।
এছাড়া নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। কেরানীগঞ্জের সাতটি ইউনিয়ন, সাভারের তিনটি ইউনিয়ন ও কামরাঙ্গীরচরে তিনটি ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা-২ সংসদীয় আসন গঠিত। অপরদিকে কেরানীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে ঢাকা-৩ সংসদীয় আসন গঠিত।
ঢাকা-২ এর কালিন্দী ইউনিয়নের ভোটার মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, এই আসনে নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। কামরুল ইসলাম গত তিনবার এই আসনের সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এলাকার উন্নয়ন করেছেন। ভোটারদের মধ্যে তাকে নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। আমরা আশা করছি এবারও তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।
ঢাকা-৩ এর ভোটার ও কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন এলাকার বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন জানান, বর্তমান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ভাই গত তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এই এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এলাকায় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। আমরা আশা করছি এবারও তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করে এলাকার আরও উন্নয়ন করবেন।
ঢাকা-২ এর নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম আজ বুধবার নির্বাচনি প্রচারণার সময় বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি এই এলাকায় থেকে যুদ্ধ করেছি। এই এলাকার জনগণের সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তারা আমাকে একাধিকবার ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। আমি আশা করছি, এবারও এই এলাকার ভোটাররা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে সংসদে পাঠাবেন।
ঢাকা-২ সংসদীয় আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাক্তার হাবিবুর রহমান নির্বাচনি প্রচারণার সময় জানান, আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে আমার পোস্টার ব্যানার ছিড়ে ফেলার খবর পেয়েছি। এছাড়াও আমার প্রচারণায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বাধা সৃষ্টি করছে। আমি আশা করি, জনগণ আমাকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ট্রাক মার্কায় ভোট দিয়ে ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাবেন।
নির্বাচন কমিশনারের প্রতি দাবি জানিয়ে ডাক্তার হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে কেন্দ্রে আমার পোলিং এজেন্টরা যেন নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারে সেই দাবি করছি। তাদেরকে যেন কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বের করে দিতে না পারে, সেই ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।
ঢাকা-৩ এর নৌকার প্রার্থী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু নির্বাচনি প্রচারণের সময় বলেন, আমার বাবা অধ্যাপক হামিদুর রহমান এই এলাকার জনগণের প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধক্ষ ছিলেন। তাই জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগের সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক। আমার বাবা এলাকার জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। আমিও গত তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে, এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আমি আশা করি এবারও এলাকার ভোটার ভাইবোনেরা নৌকায় ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাবেন।
নির্বাচনি পরিবেশ সম্পর্কে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কমিশনার আব্দুল আজিজ জানান, কোন প্রার্থী যেন নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারে, এজন্য ব্যাপক নজরদারি ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন সকল ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে এইজন্য আমরা ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।