বাংলাদেশিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যা বললেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান

Looks like you've blocked notifications!
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। এএফপির ফাইল ছবি

বাংলাদেশের নবনির্বাচিত সরকারকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি দেশের প্রতিশ্রুতি নবায়নের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক৷ সহিংসতা এবং বিরোধী প্রার্থী ও সমর্থকদের দমন-পীড়নের ফলে রোববারের (৭ জানুয়ারি) ভোটের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ওএইচসিএইচআর গতকাল সোমবার বাংলাদেশের সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে৷

বিবৃতিতে সংস্থাটির প্রধান ফলকার টুর্ক বলেন, ‘ভোট শুরুর আগের কয়েক মাস হাজার হাজার বিরোধী সমর্থককে নির্বিচারে আটক করা হয়েছে বা ভয় দেখানো হয়েছে৷ এই ধরনের কৌশল সত্যিকারের আন্তরিক প্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক নয়৷’

ফলকার টুর্ক বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি যেন সব বাংলাদেশির মানবাধিকার সম্পূর্ণরূপে বিবেচনায় নেওয়া হয় এবং দেশে সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের ভিত্তিকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়৷’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বয়কট করা এই নির্বাচনের আগে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা গণগ্রেপ্তার, হুমকি, গুম, ব্ল্যাকমেইলিং এবং নজরদারির মতো পদ্ধতি কাজে লাগানোর তথ্য পাওয়া গেছে৷ বিরোধী দলের বিরুদ্ধেও অগ্নিসংযোগসহ রাজনৈতিক সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে।’

বিরোধীমত দমন নিয়ে উদ্বেগ

বাংলাদেশে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর দমনমূলক কার্যক্রম নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফলকার টুর্ক।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘২৮ অক্টোবর থেকে প্রায় ২৫ হাজারবিরোধী সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও রয়েছেন। গত দুই মাসে অন্তত ১০ জন বিরোধী দলের সমর্থক হেফাজতে (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর) মারা গেছেন বা নিহত হয়েছেন। এর ফলে সম্ভাব্য নির্যাতন বা আটকাবস্থার কঠোর পরিস্থিতি বিষয়েও গুরুতর উদ্বেগের জন্ম নেয় বলেও মনে করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান।

টুর্কের দাবি, অনেক মানবাধিকার রক্ষাকারীকে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে এবং কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, সম্ভাব্য জোরপূর্বক অন্তর্ধানের ঘটনা ঘটেছে কয়েক ডজন, যার বেশির ভাগই ঘটেছে নভেম্বরে৷

ফলকার টুর্ক আরও বলেন, ‘এই ঘটনাগুলো স্বাধীনভাবে তদন্ত করা উচিত এবং দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রচারের সময় এমনকি নির্বাচনের দিনেও আইনের খেলাপ ও অনিয়মের পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং কার্যকর তদন্ত করা উচিত৷’  

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ কঠিন পথে গণতন্ত্র অর্জন করেছিল, সেটিকে কৃত্রিমতায় পর্যবসিত করা যাবে না৷’

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল এবং আমি আন্তরিকভাবে আশা করব, এটি রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হবে। সব বাংলাদেশির ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে৷’