ইউপি নির্বাচনে সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপের অভিযোগ
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলু (আনারস) সাংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
এই প্রার্থীর দাবি, এতে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ অসম্ভব এবং খুনোখুনির শঙ্কা রয়েছে।
ইউনিয়নের পুরাতন তেওয়ারীগঞ্জ বাজারে প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদ সম্মেলনে ওমর ফারুক ইবনে হুসাইন ভুলু বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনে সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন। এতে এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। বোরহান চৌধুরীর লোকজনের দফায় দফায় হামলা ও আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে নির্বাচনি পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। আমি সুষ্ঠু ভোট চাই।’
ওমর ফারুক ইবনে হুসাইন ভুলু জানান, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এমপি পিংকু গত শনিবার নতুন তেওয়ারীগঞ্জে এসেছেন। সেখানে বৈঠকে বসে অটোরিকশার প্রার্থী আক্তার হোসেন বোরহান চৌধুরীর সঙ্গে নেতাকর্মীদের সমঝোতা করে দেন। গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নতুন তেওয়ারীগঞ্জ বাজারে তাঁর পথসভায় বোরহান চৌধুরীর লোকজন দফায় দফায় হামলা করে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে এমপির নাম ভাঙিয়ে বোরহান চৌধুরী গণসংযোগ ও ভোট চাচ্ছেন। একইভাবে তার (ভুলু) কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। কয়েকটি স্থান থেকে ইউছুফ মাঝি ও মো. দুলালকে তুলে নিয়ে হুমকি দিয়ে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া এলাকায় নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন স্থানে লাগানো ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বোরহান চৌধুরীর লোকজন চুরি করে নিয়ে গেছে। এসব ঘটনায় তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত প্রার্থী ও তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেন বোরহান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যে। বহিরাগতদের এনে তিনি গণসংযোগ করছেন।’
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু ও গ্রহণ নির্বাচন চাই। জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে। আমার নাম ভাঙিয়ে ভোট চাওয়ার ঘটনা ভুয়া। এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আমি সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে বলেছি।’
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক বলেন, ‘কিছু অভিযোগ শুনেছি। তবে লিখিতভাবে কেউই কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ভুলু ও বোরহান ছাড়াও তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে আরও ছয়জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আল মাহমুদ ইবনে হুছাইন (মোটরসাইকেল), মনির মাহমুদ নোবেল (টেলিফোন), উসমান হোসেন (চশমা), মাহফুজুর রহমান (ঘোড়া), শাহেদা আক্তার (রজনীগন্ধা) ও সবুজের রহমান (ঢোল)। আগামী ২৮ এপ্রিল তেওয়ারীগঞ্জসহ সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ, দালালবাজার, লাহারকান্দি ও দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ হবে।