ভোটের দিন সতর্ক থাকব, কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা হবে : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ভোটের দিন আমরা সতর্ক থাকব। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা সঠিকভাবে তদারকিতে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন ভবনে পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে।’
আজ মঙ্গলবার (৭ মে) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন সিইসি।
সিইসি হাবিবুল আউয়াল জানান, বুধবার দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ১৪০টি উপজেলায় ভোট হচ্ছে। এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। এদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল চারটা পযন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
স্থানীয় ভোটে প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘মন্ত্রী-এমপিদের নিবৃত করা হয়েছে, প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়, সে বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।’
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সে লক্ষ্যে বিভাগ, জেলা পর্যায়ে কমিশন মতবিনিময়ও করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ও টহলের সুবিধার্থে ধাপে ধাপে ভোটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণার পর বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতা, স্থগিত ও ধাপ পরিবর্তনের কারণে কিছু বাদ দেওয়ার পর আগামীকাল বুধবার ১৪০টি উপজেলায় ভোট হবে।
সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ জন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন আর পার্বত্য এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে অন্তত ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য নিয়োজিত থাকবে।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। সংশ্লিষ্টরা নিয়ম-কানুন প্রতিপালন করলে নির্বাচনটা সহজ হবে; তারা যদি বিশৃঙ্খল তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা দুরূহ হবে। এবার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং প্রার্থীসহ সবার সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। নির্বাচনটাকে স্বচ্ছ করার চেষ্টা করছি।’
ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ের নানান ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান সিইসি। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে কারও কারও প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন যাতে প্রভাবিত না হয়, সেজন্যে ইসির তরফ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সংসদ সদস্য, মন্ত্রী অনেককে নিবৃত করতে পেরেছি। হয়তবা অনেকে এলাকায় আছেন। সরকারের তরফ থেকে যতদূর দেখেছি, দলীয়ভাবে হোক বা সরকারের পক্ষ থেকে হোক; যাতে নির্বাচনটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, কেউ যেন প্রভাব বিস্তার না করেন, সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
সিইসি বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ থাকলেও দলীয় মনোনয়ন না থাকায় স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন প্রার্থীরা। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেখা যাক, কতটুকু হয়। প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু অ্যাকশন নিয়েছি। বিভিন্ন ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করা হয়, এজন্যে একজনকে ডাকিয়ে এনে বক্তব্য নিয়েছি, প্রার্থিতা বাতিল করেছি।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘এটা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনটা যেন অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়, সে বার্তাটি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে।’