বই জাল ঠেকাতে প্রকাশকদের করণীয়

Looks like you've blocked notifications!
বই জাল হলে প্রকাশকরা আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন। ছবি: গিগাওম

 

“লেখক-প্রকাশকের অনুমতি ছাড়া বই নকল করে প্রকাশ এখন নিত্য-নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। নকল করে বই প্রকাশ যে অবৈধ, তা নিয়ে চিন্তা করারও প্রয়োজন মনে করছেন না কেউ, এটি এখন এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, নকল করে বই প্রকাশ যেন বৈধ কাজ”, এনটিভি অনলাইনকে এভাবেই অভিযোগ জানাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী অঙ্কুর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ । শুধু তিনি নন তাঁর মতো আরো অনেকে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন । কোনো ভাবে থামানো যাচ্ছে না এসব নকল প্রকাশকদের। বরং দিন দিন বাজার ছেয়ে যাচ্ছে নকল প্রকাশনীর বইয়ে।

প্রকাশকরা জানান, প্রকাশনীর নাম, প্রচ্ছদ, পাণ্ডুলিপি ঠিক রেখেই বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয় ওই সব বই। এতে মূল প্রকাশক নকল বই প্রকাশের বিষয়টি বুঝেই উঠতে পারছেন না । প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে জনপ্রিয় কোনো বইয়ের ২০ হাজার কপি ছাপানোর পর দশ হাজার বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে আরো ৩০ হাজার কপি। তাহলে বাকি ২০ হাজার বই কোথা থেকে এলো? এভাবে জনপ্রিয় কোনো বই প্রকাশের পরের দিনই নকল করে বাজারে ছেড়ে দিচ্ছে আরেক ভুয়া প্রকাশনী। এতে চরম অর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মূল প্রকাশকরা। একইসঙ্গে নিজ কর্মের সঠিক পারিশ্রমিক না পাওয়ায় সৃজনশীল কাজের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন লেখকরা ।

প্রতিকারের উপায়

বই নকল হলে লেখক-প্রকাশকরা দুটি বিষয় নিয়ে আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন। তা হলো কোনো লেখকের বই বা পাণ্ডুলিপি নকল করে প্রকাশ হলে তিনি সরাসরি আর্থিক ক্ষতি পূরণ এবং নকল বইয়ের প্রকাশনার নিষেধাজ্ঞা চেয়ে জেলা জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা করে প্রতিকার চাইতে পারেন। এ ছাড়া নকল বই প্রকাশের অপরাধে ফৌজদারি মামলা করে প্রতিকার চাইতে পারেন ।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান এনটিভি অনলাইনেকে বলেন, বই নকল করে প্রকাশ করলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলার পাশাপাশি ফৌজদারি মামলা করতে পারেন। এ মামলায় নকল বই প্রকাশের অপরাধে সর্বোচ্চ চার বছরের জেল এবং সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এ ছাড়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই নকল বই জব্দ করার ক্ষমতা পুলিশের রয়েছে। তবে অনেক সময় বিড়ম্বনার কারণে অনেকে মামলায় জড়াতে চান না। এতে নকল প্রকাশকরা আরো বেশি উৎসাহ পেয়ে যায়।     

জাতীয় গ্রন্থাগারে বই জমা দেওয়া

বাংলাদেশ কপিরাইট আইন অনুযায়ী একজন প্রকাশককে প্রকাশিত প্রতিটি বই এক কপি করে জাতীয় গ্রন্থাগারে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মূল প্রকাশকরা জাতীয় গ্রন্থাগারে তাদের প্রকাশিত বইয়ের একটি কপি জমা দিলে নকল প্রকাশকরা সহজে ধরা পড়ে যায়। সাধারণত বই প্রকাশের ষাট দিনের মধ্যে তা জমা দিতে হবে, অন্যথায় প্রতিটি বইয়ের কপির জন্য এক হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।