সামার্থ যেন মোগলি, খেলার সাথি বানর
দুই বছর বয়সী সামার্থ বাঙ্গারি অন্যসব শিশুর চেয়ে একটু আলাদা। তার এলাকায় মানুষ তাকে ‘দেবতার পুনর্জন্ম’ বলে মনে করেন। এর পেছনে কারণটাও অদ্ভুত। এই ছোট্ট বালককে হরহামেশাই খেলতে দেখা যায় তার চেয়ে দ্বিগুণ উচ্চতার একদল লেঙ্গুর বানরের সঙ্গে। ভারতের বেঙ্গালুরু শহরের প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে আল্লাপুর নামে এক গ্রামে দেখা মেলে এই বিস্ময় বালকের।
রোজ তাকে দেখা যায়, তার উঠোনে বসে বানর বাহিনীর সঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করে খেতে। সে যখন স্কুল থেকে ফেরে, বানরগুলো অধির আগ্রহে তার ঘরের বাইরে অপেক্ষা করে। আর ছোট্ট সমর্থ পকেট ভর্তি করে তার লেজুরে বন্ধুদের জন্য খাবার নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
কিছু সাহসী বানর তো তার ঘরেই ঢুকে পড়ে, সকাল সকাল তার ঘুম ভাঙাবে বলে। তার এরূপ বাঁদর সখ্যের জন্য তাকে অনেকে রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের বিখ্যাত ‘দ্য জঙ্গল বুক’-এর বনে-জঙ্গলে বেড়ে ওঠা এবং পশুপাখির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলা মোগলির সঙ্গেও তুলনা করে থাকেন।
এই ছোট বালকটির মুখে এখনো ঠিক করে কথা ফোটেনি ঠিকই, কিন্তু বাঁদরদের সে খুব ভালোভাবেই অনুকরণ করতে শিখে গেছে। বাবা-মায়েরও তার এই বাদরপ্রীতি নিয়ে কোনো অভিযোগ বা শঙ্কা নেই। তাঁরা বলেন, ‘বাঁদরগুলো ওর দেখাশোনা করে এবং কখনই আঘাত দেয় না। আমরা প্রাণীদের বিশ্বাস করি এবং যতক্ষণ ঘরের কাজ সারি, ততক্ষণ তাদের সঙ্গে আমার ছেলে খেলে।’
সামার্থের মা বাবা জানান, ঘটনাটি ছয় মাস আগে থেকে শুরু হয়, একদল বাঁদর উঠোনে খেলতে থাকা সামার্থের হাত থেকে খাবার কেড়ে নেয়। আশ্চর্যজনকভাবে, সামার্থ একটুও কাঁদেনি, ভয়ও পায়নি; বরং বাঁদরগুলোকে ভেংগাতে থাকে। এর পর থেকেই তাদের এমন সখ্য গড়ে ওঠে, যা এখনো বিদ্যমান।
বাঁদরের সঙ্গে তার এমন বন্ধুত্ব দেখে গ্রামের লোকজন তাকে দেবতা হনুমানের অবতার বলে গণ্য করে। সে যখন বাঁদর বাহিনীর সঙ্গে খেলায় মশগুল, তখন গ্রামের বেশ কিছু লোক জড়ো হয়ে যায় এই বিরল দৃশ্য অবলোকন করতে।