রম্য
এই সাদাকালো জীবন ভালো লাগে না : পোস্টার
নির্বাচন শব্দটি নিয়ে চিন্তা করামাত্রই যে ছবিটি চোখে ভাসে, তা হলো সারি সারি পোস্টার। তেমনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোনো এক নাম না জানা দলের একটি পোস্টারের একান্ত কাল্পনিক সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হলো হাস্যরসে।
হাস্যরস : কেমন আছেন পোস্টার সাহেব?
পোস্টার : কেমনে ভালো থাকি? এই সাদাকালো জীবন কার ভালো লাগে বলেন? আগে কত রঙিন জীবন ছিল আমাদের। অথচ দেখেন ফেসবুক কিংবা ইউটিউবের বদৌলতে কিন্তু নির্বাচনে প্রচারে অনেক আধুনিকতা পেয়েছে। শুধু আমরাই অবহেলিত।
হাস্যরস : দেখুন এতে তো উপকারও রয়েছে। কে ফর্সা, কে কালো কোনো বিভেদ নেই; সকল প্রার্থীই সমান চেহারার।
পোস্টার : হুম। খারাপ বলেননি।
হাস্যরস : আচ্ছা আপনার গায়ে লেখা সৎ, যোগ্য, জনদরদি ইত্যাদি বিশেষণের মধ্যে কোন কোন কথা আসলেই সত্য?
পোস্টার : ভাই কী বলব, দুঃখের কথা পোস্টারজুড়ে একটি মাত্র সত্য আছে। যা হলো প্রার্থীর নাম।
হাস্যরস : তার মানে সব মিথ্যা ? তাহলে সবচেয়ে বড় মিথ্যা কোনটি?
পোস্টার : এই যে নিচে পড়ুন ‘প্রচারে : এলাকাবাসী’।
হাস্যরস : আচ্ছা ইদানীংকালে পোস্টার ছেঁড়ার একটা প্রবণতা বেড়েছে। আপনার অনুভূতি কী?
পোস্টার : ভাই আপনাকে যদি মই দিয়ে গাছে কিংবা খাম্বায় উঠিয়ে দিয়ে হঠাৎ টেনে নামানো হয়, কেমন লাগবে? আমাদেরও সেই কষ্টটাই অনুভূত হয়।
হাস্যরস : তো জনগণের কাছে আপনাদের কোনো চাওয়া-পাওয়া আছে কি?
পোস্টার : জি অবশ্যই। প্রথমত, কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন যে আমার প্রার্থী মূল্যবান না হলেও আমার গায়ে লেখা সৎ, জনদরদি কিংবা সমাজ সংস্কারকের মতন ইত্যাদি শব্দগুলো অত্যন্ত মূল্যবান ও পবিত্র। তাই নির্বাচনের সময় যেমন পোস্টার ছিঁড়লে আইন রয়েছে, তেমনি নির্বাচনের পরে যত্রতত্র পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে রাখার বিরুদ্ধেও যেন আইন করা হয়। আর জনগণকে বলছি, সবচেয়ে বড় পোস্টার আপনার নিজের বিবেক। সেটা দেখেই ভোটকেন্দ্রে যাবেন। রাস্তায় চলতে চলতে ওপরে ঝুলন্ত দড়িতে আমার দিকে না তাকানোই ভালো নতুবা আপনি নিজেই পোস্টার হয়ে যেতে পারেন।