গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু, বিক্ষোভ-অবরোধ

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ। ছবি : এনটিভি

কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এক পোশাকশ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে তাঁর সহকর্মীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কর্মবিরতি, বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধ করেছে। আজ শনিবার দুপুরের দিকে ওই শ্রমিক মারা যান।  

নিহত শ্রমিকের নাম মফিদুল ইসলাম (৩২)। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার চাঁদপুর সিঙ্গা গ্রামের আনসার আলীর ছেলে।

নিহত শ্রমিকের সহকর্মীদের বরাত দিয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসলাম হোসেন জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া এলাকার ভাড়া থেকে মফিদুল ইসলাম স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার চাকরি করতেন। প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার সকাল ৮টায় কারখানায় এসে কাজে যোগ দেন। কিছু সময় পর তিনি বুকে ও পেটে ব্যথা অনুভব করেন। একপর্যায়ে তিনি চিকিৎসার জন্য লাইন ইনচার্জের কাছে ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু তাঁকে ছুটি না দিয়ে কারখানার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় প্রায় এক ঘণ্টা পর সকাল ৯টার দিকে তাঁকে কারখানার বাইরে যাওয়ার জন্য গেইট পাস দেওয়া হয়। গেইট পাস পেয়ে তিনি বাসায় চলে যান। বাসায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান ভাড়াবাড়ির মালিক। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে মফিদুল ইসলাম মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর কারখানায় পৌঁছালে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।

গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ। ছবি : এনটিভি

শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আরো জানান, মফিদুলের লাশ কারখানায় এনে শ্রমিকরা জানাজা পড়ান। পরে শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ছুটি পেতে দেরি হওয়ায় চিকিৎসার অভাবে মফিদুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। তাঁরা দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে এবং লাশের ময়নাতদন্ত করানোর উদ্যোগ নেয়। একপর্যায়ে শ্রমিকরা বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বাইপাস সড়কের (ভুলতা-নাওজোর) ওপর অবস্থান নিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করেন।

জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, অবরোধের কারণে সড়কের উভয় দিকে যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের আলোচনা হয়। আলোচনাকালে লাশ দাফনের জন্য ময়নাতদন্ত ছাড়াই গ্রামের বাড়ি নেওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশ। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে শ্রমিকরা সড়কের অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এদিকে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই শ্রমিক মফিদুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন।