লাখপতির গল্প

ফেসবুকে পেজ খুলে দিয়েছিলেন স্বামী, এখন লাখপতি জেসি

Looks like you've blocked notifications!
সফল উদ্যোক্তা জেসমিন জেসি। ছবি : সংগৃহীত

শুরুতে জেসমিন জেসি ক্রাফটার ছিলেন। পেপার কাটিংয়ের মাধ্যমে প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু বানাতেন, যা অনেকের নজর কেড়েছিল। সে সময় কাজের মান দেখে তাঁর স্বামী ফেসবুকে একটি পেজ খুলে দিয়েছিলেন। সেখান থেকে যাত্রা শুরু। হ্যান্ডিক্রাফটস আইটেম ও দেশীয় শাড়ি বিক্রি করে এখন লাখপতি জেসি। তাঁর অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান—চারুলতা।

সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় জেসমিন জেসির। জানান নিজের উদ্যোক্তা-জীবনের কথা। কুশল বিনিময়ের পর ব্যস্ততা প্রসঙ্গে বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো আছি। পেশায় আমি উদ্যোক্তা। আমার ব্যস্ততা সংসার-সন্তান আর উদ্যোগ নিয়ে। মূলত ২০১৬ সাল থেকে এর যাত্রা শুরু। কিন্তু শুরুটা শখের বশে ছিল বলে তেমন একটা সিরিয়াস ছিলাম না। তবে ২০১৮ সালের শেষ দিক থেকে কাজটাকে সিরিয়াসলি নিয়েছি।’

জেসি জানালেন, চারুলতায় মূলত কাঠ ও প্লাইউডের তৈরি বিভিন্ন আইটেমের হ্যান্ডিক্রাফটস পণ্য পাওয়া যায়। এটাই তাঁর প্রধান পণ্য। তবে এতে দেশীয় বিভিন্ন শাড়িও পাওয়া যায়। সাড়াও মিলছে বেশ।

সফল উদ্যোক্তা জেসমিন জেসি। ছবি : সংগৃহীত

উদ্যোক্তা হতে পেরে কেমন লাগছে? জেসমিন জেসি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, উদ্যোক্তা হয়ে অবশ্যই অনেক ভালো লাগে। আমি একজন উদ্যোক্তা, এটা অন্যকে বলতে এবং অন্যের কাছে শুনতে খুব ভালো লাগে। আমার কাজের অনুপ্রেরণা বলতে গেলে আমিই; তবে স্বামীকে কিছু ক্রেডিট না দিলেই নয়। আসলে কাজের একদম  শুরুতে আমি একজন ক্রাফটার ছিলাম। পেপার কাটিংয়ের মাধ্যমে প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু বানাতাম, যা সবার নজর কেড়েছিল। সে সময় আমার কাজের মান দেখে আমার স্বামী আমাকে একটা পেজ খুলে দিয়েছিল। সেখান থেকেই মূলত শুরু।’

পরিবার থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? জেসি বলেন, ‘মেয়েদের চলার পথ কখনওই মসৃণ হয় না। বাধা এদের সঙ্গী। তবে যতটুকু সাপোর্ট পাই আলহামদুলিল্লাহ।’

সফল উদ্যোক্তা জেসমিন জেসি। ছবি : সংগৃহীত

উই-এর (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) ফেসবুক গ্রুপ জেসির উদ্যোক্তা-জীবনকে প্রভাবিত করেছে। উই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উই নিয়ে কিছু বলতে গেলে আসলে বিপাকে পড়তে হয়। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব, ভেবে পাই না। উই নিয়ে বলতে গেলে সারা দিনেও শেষ হবে না। তবে যতটুকু না বললেই নয় সেটা হলো, উই বাংলাদেশের নারীদের নতুন করে জন্ম দিয়েছে। পথ চলতে শিখিয়েছে। উইয়ের অবদান তো নিঃসন্দেহে অনেক বেশি, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না; উইয়ের সাথে আমার পথ চলা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে। প্রথম দিন থেকেই পেয়ে যাচ্ছি, স্ট্রংলি বিজনেস করতে পারাটাও উই থেকে একটু একটু করে শেখা।’

উৎসবের দিনগুলোতে কেমন বিক্রি হয়? জেসমিন জেসি বলেন, ‘আমার হ্যান্ডিক্রাফটস আইটেমগুলোতে ঘর সাজানোর মতো অসংখ্য আইটেম আছে। তাই সৌন্দর্যপিয়াসী মানুষ ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে নিজেদের পাশাপাশি ঘরবাড়ি সাজানোর দিকেও যথেষ্ট সচেতন। আর এ রকম সময়ে চারুলতায় নতুন কিছু না কিছু আইটেম থাকেই, যা ক্রেতাদের নজর কাড়ে খুব সহজে।’

জেসমিন জেসির স্বপ্ন, চারুলতার পরিসর বড় করা। লাখপতি হওয়া প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘লাখপতি হওয়া ব্যাপারটা এমন না যে আমি লাখপতি হতে চাচ্ছি আর চাওয়া অনুযায়ী হয়েও গেলাম! কোনও কাজই সহজ নয়। আর কাজের পেছনে আমরা যে যত বেশি মেধা, শ্রম এবং সময় দেব, কাজ আমাদের সেভাবেই সাফল্য এনে দেবে।’ জেসির মতে, নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে চাইলে সবাই এগিয়ে যেতে পারেন।