বন্যার প্রভাব সবজিবাজারে, কাঁচামরিচের ‘ডবল সেঞ্চুরি’

Looks like you've blocked notifications!

বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে বাড়তে থাকা সবজির দাম কমেনি। বরং কিছু কিছু সবজির দাম আরো বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে রাজধানীর খুচরা বাজারে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। চলতি সপ্তাহে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে ২০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।

বেগুন, বরবটি, কাঁকরোল, করলা, মুলা, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ধুন্দুলসহ বেশিরভাগ সবজিই ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সবজির সঙ্গে সঙ্গে চলতি সপ্তাহে বেড়েছে মাছের দামও। খুচরা বাজারে কোনো কোনো মাছের দাম কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আজ শুক্রবার রাজধানীর মুগদা, গোপীবাগ, মালিবাগ ও মানিকনগরসহ বেশ কিছু বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টিতে শাকসবজি নষ্ট হলে লোকসানের কিছুটা তুলতে হয় অন্যগুলোর দাম বাড়িয়ে। তাই সবজির দাম কিছুটা বেশি। আর বর্ষার শুরুতে মাছের দাম কিছুটা কম থাকলেও পানি বেড়ে যাওয়ায় মাছের উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু আগের মতোই বাড়তি দামে ৩৫-৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর কেজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত উঠছে। গত সপ্তাহ থেকে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বাজারভেদে বেগুন বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এ ছাড়া ঝিঙা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ও চিচিঙ্গা ৬০ টাকায়, ঢেঁড়শ ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। করলার দাম কেজিতে ১০ টাকা  বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। ছোট লাউ প্রতিটি ৬০ টাকা এবং চালকুমড়া প্রতিটি ৪০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচাকলা প্রতি হালি ৩০-৪০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ২০ থেকে ২৫ টাকা। চলতি সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে খুচরা বাজারে এখন ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় উঠেছে।

জানতে চাইলে মুগদা বাজারের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, সবজির দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাড়তি। আড়তে মালের ঘাটতিতে দাম বেশি রাখছেন আড়তদাররা। এ ছাড়া বৃষ্টিতে অনেক শাকসবজি নষ্ট হয় বলে অনেক বিক্রেতা দাম বাড়িয়ে লোকসান সমন্বয় করেন।

তবে শাকের দাম কিছুটা কম। প্রতি আঁটি লালশাক ও পালংশাক ২০ থেকে ২৫ টাকা, শাপলা, পুঁইশাক ও ডাঁটা শাক ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহে মাছের দামও বেড়েছে অনেকটা। কেজিতে রুই ও কাতল ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে এখন ৩০০ থকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বেড়েছে চিংড়ি, পাঙাশ ও পাবদা মাছের দাম।

মুগদা বাজারে গত সপ্তাহে পাঙাশ কেনা যেত ১২০ থেকে ১৬০ টাকায়। এ সপ্তাহে বিক্রেতারা দাম চাইছেন ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। এ ছাড়া পাবদা মাছের দাম দুই সপ্তাহে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে, এখন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়ার দাম কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ছোট ১১০ থেকে ১৩০ টাকা; আর বড় ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোয়াল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, দেশি মাগুর ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট মাছের মধ্যে পুঁটি ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ৩২০ থেকে ৩০০ টাকা। এ ছাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে মালিবাগ বাজারের মাছ বিক্রেতা জসীম উদ্দিন বলেন, আগের তুলনায় মাছের সরবরাহ কমে গেছে। তাই দামও বেশি। গত সপ্তাহে তেলাপিয়া ঘাটে কিনেছি ১১০ টাকা। আজকে কেনা পড়েছে ১৩০ টাকা, খরচসহ ১৪০ টাকা পড়ে গেছে। চিংড়ি কেনা ৫৫০ টাকায়। পাইকারিতে যদি এত বেশি দাম হয়, খচুরা বিক্রি করব কত? এ রকম সব মাছেরই দাম বাড়তি।