বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৩ বাধা কাটাতে পারলে টেকসই প্রবৃদ্ধি : বিশ্বব্যাংক

Looks like you've blocked notifications!
বিশ্ব ব্যাংক। ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দ্রুত বর্ধনশীল দেশের একটি। তবে, ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) চার শতাংশের নিচে নেমে যেতে পারে, বলেছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি অর্থনৈতিক সংস্কারে তিনটি বাধা খুঁজে পেয়েছে। এই বাধাগুলোর ব্যাপক সংস্কার না হলে জিডিপি নেমে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। একইসঙ্গে বলেছে—যদি এই তিনটি প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করা যায়, তাহলে উন্নয়ন বৃদ্ধি পাবে এবং প্রবৃদ্ধি আরও টেকসই হবে।

বিশ্বব্যাংক তার এক সমীক্ষার প্রতিবেদনে যে তিনটি বাধার কথা বলেছে, সেগুলো হলো—বাণিজ্য প্রতিযোগিতার হ্রাস, একটি দুর্বল ও অরক্ষিত আর্থিক খাত এবং ভারসাম্যহীন ও অপর্যাপ্ত নগরায়ণ। যদি এই তিনটি প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করা যায়, তাহলে উন্নয়ন বৃদ্ধি পাবে এবং প্রবৃদ্ধি আরও টেকসই হবে।

একইসঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বিশ্বব্যাংক কিছু সুপারিশ করেছে। যেমন—রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পণ্যে বৈচিত্র্য আনার বিষয়টি রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দ্রুত বর্ধনশীল দেশের একটি। তবে, আত্মতুষ্টির কোনো কারণ নেই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক উচ্ছ্বাস কখনই স্থায়ী প্রবণ নয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধি সবসময় উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকে। খুব কম দেশই দীর্ঘ সময়ের জন্য উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। শীর্ষ দশে থাকা দেশগুলোর মাত্র এক-তৃতীয়াংশই পরবর্তী দশকে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশের শুল্ক হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি, এ কারণে বাণিজ্য সক্ষমতা কমছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাত প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক বলেছে, ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত চার দশকে আর্থিক খাতে উন্নতি হলেও তা এখনও পর্যাপ্ত নয়।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের পরবর্তী উন্নয়ন পর্যায়ের জন্য নগরায়ণ অপরিহার্য। ভারসাম্যপূর্ণ নগরায়ণের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এবং আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর বলছেন, ‘বিশ্বব্যাংকের কথার সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। আমাদের প্রথম প্রজন্মের সংস্কার করা হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের সংস্কার করতে হবে। কিন্তু, আমরা এখনও দ্বিতীয় প্রজন্মের সংস্কার শুরু করিনি।’

আহসান আরও বলেন, ‘ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে। বর্তমান নীতির মাধ্যমে আমাদের মাথাপিছু আয় ১২ হাজার মার্কিন ডলারে নিয়ে যেতে পারি না। মানবসম্পদ উন্নয়নে আমাদের কোনো বিকল্প নেই।’