লাখপতির গল্প

মেয়ে ও স্বামীর প্রেরণায় সফল উদ্যোক্তা রাকিবা

Looks like you've blocked notifications!
সফল উদ্যোক্তা রাকিবা আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

মেয়ে ও স্বামীর অনুপ্রেরণায় উদ্যোগ শুরু করেন রাকিবা আহমেদ। এর পর উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট (উই) নাসিমা আক্তার নিশার প্রেরণায় এখন সফল উদ্যোক্তা রাকিবা। মূলত কাজ করছেন জামদানি ও তাঁতের শাড়ি নিয়ে। তাঁর অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান—বুনন (Bunonn)।

সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় রাকিবা আহমেদের। জানান নিজের উদ্যোক্তা-জীবনের কথা। কী নিয়ে ব্যস্ততা এখন? রাকিবা আহমেদ বলেন, ‘আমার উদ্যোগ নিয়ে ব্যস্ত আছি। বর্তমানে আমি উই-এর ঢাকার ‌২৪ জন প্রতিনিধির একজন। আমার এরিয়া নিকেতন, তেজগাঁও, বেগুনবাড়ি, সাতরাস্তা, মহাখালী, রসুলবাগ, আরজতপাড়া, শাহীনবাগ, তেজতুরি বাজার, তেজকুনিপাড়া ও নাখালপাড়া। সংগত কারণেই উদ্যোগের পাশাপাশি আমি উই-এর কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি।’

রাকিবা জানান, তিনি গত বছরের জুলাই থেকে উদ্যোগ শুরু করেন। বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছেন। তাঁর রিপিট কাস্টমার বেশি। কাস্টমারের রিভিউ ও ফিডব্যাকও খুব ভালো। উদ্যোগের শুরু থেকেই রাকিবা পরিবারের সদস্যদের সহায়তা পেয়ে আসছেন। তাঁদের সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণাই তাঁর এগিয়ে যাওয়ার চালিকাশক্তি।

কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন? রাকিবা আহমেদ বলেন, ‘জামদানি শাড়ি ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি নিয়ে কাজ করছি। এ ছাড়া জামদানি থ্রি-পিস, টু-পিস এবং পাঞ্জাবি আছে আমার উদ্যোগের কালেকশনে।’

সফল উদ্যোক্তা রাকিবা আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

এ পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন রাকিবা আহমেদ। উই-এর ফেসবুক গ্রুপ রাকিবার উদ্যোক্তা-জীবনকে প্রভাবিত করেছে। উই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নাসিমা আক্তার নিশা আপুর দূরদর্শিতার জন্য আজ উই-এর জন্ম। উই লাখো নারীর স্বপ্ন পূরণের প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশের ইতিহাসে উই-ই একমাত্র প্ল্যাটফর্ম, যা একজন নারীর সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। উই-এর জন্ম না হলে আজ দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নারী উদ্যোক্তাদের জন্ম হতো না।’

রাকিবা আরও বলেন, ‘অনেক দিন থেকেই উই গ্রুপের পোস্টগুলো ফলো করছিলাম। যেহেতু আমি একজন ওয়ার্কিং উইমেন ছিলাম, সেহেতু কখনওই বসে থাকিনি। কিছু না কিছু কাজের সাথে সব সময় ইনভলব ছিলাম। গত বছরের মার্চ মাসে লকডাউনের পর যখন প্রতিদিন টিভি নিউজ এবং ফেসবুকের টাইমলাইনে করোনার নিউজগুলো শুনে শুনে এবং দেখে দেখে  ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম, তখনই উই-এর পোস্টগুলো পড়ে অনুপ্রাণিত হই। নিশা আপুর পোস্টগুলো আমাকে আকৃষ্ট করত। আপুর প্রতিটা পোস্ট পড়ে দেখতাম এবং পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় থাকতাম রাত জেগে জেগে। উই না হলে হয়তো বা আমি আর আমার উদ্যোগটা শুরু করার স্বপ্ন দেখতাম না।’

উদ্যোক্তা হওয়ার পরে মধুর স্মৃতি প্রসঙ্গে রাকিবা বলেন, ‘২০২১ সালের ২ মে আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন। এ দিনটি আমার জন্য খুবই একটা স্পেশাল দিন। কারণ, এ দিনেই উই জননী নাসিমা আক্তার নিশা আপু আমাকে উই-এর মতো এত বড় একটা প্ল্যাটফর্মের এবং ঢাকার নিকেতন, গুলশান জোনের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন সমগ্র উইবাসী, তথা দেশবাসীর কাছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, সে দিনের ওই মুহূর্তের আগে কখনও কোনও দিন নিশা আপুর সাথে আমার দেখা হয়নি বা কথা হয়নি। এটা আমার উদ্যোক্তা-জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।’

আগামী দিনের পরিকল্পনা কী? রাকিবা আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু আমি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার, সেহেতু আমি ডিজাইনার কাস্টমাইজড শাড়ি নিয়ে কাজ করতে চাই। আমার উদ্যোগের শাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানও হয়েছে। এটা আমাকে এক ধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। অনলাইন বিজনেসের মাধ্যমে আমি বুননকে দেশে এবং বিদেশে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে তুলে ধরতে চাই।’ রাকিবার সেই প্রত্যাশা পূরণ হোক, এ কামনা সবার।