লাখপতির গল্প

হিজাব দিয়ে শুরু, এখন মাসে লাখ টাকা বিক্রি মিতাশার

Looks like you've blocked notifications!
সফল উদ্যোক্তা মিতাশা রহমান খান। ছবি : সংগৃহীত

ছয় বছর আগে হিজাব আর কাপড় নিয়ে উদ্যোগ শুরু করেছিলেন মিতাশা রহমান খান। এখন তাঁর অনলাইনভিত্তিক দুটি প্রতিষ্ঠান—হিজাব শপ অনলাইন স্টোর ও ফ্রেশ অ্যান্ড হেলদি। মাসে লাখ টাকার বেশি পণ্য বিক্রি হয় তাঁর।

সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় মিতাশা রহমান খানের। জানান নিজের উদ্যোক্তা-জীবনের কথা। কুশল বিনিময়ের পর মিতিশাকে জিজ্ঞেস করা হলো, কী নিয়ে ব্যস্ত? বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। বিজনেস নিয়েই কেটে যায় দিন। আমি ছয় বছর ধরে আমার উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে দুটি উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি।’

শুরুটা কেমন ছিল? মিতাশা বলেন, ‘আমার উদ্যোগ শুরু করেছিলাম আরও ছয় বছর আগে নারীদের হিজাব আর কাপড় নিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো যাচ্ছে। আর বিগত এক বছর ধরে, বিশেষ করে করোনাকাল থেকে আমি আর আমার স্বামী মিলে দেশীয় খাবারের উদ্যোগ শুরু করেছি।’

বর্তমানে কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন? উত্তরে মিতাশা বলেন, ‘আমি নারীদের হিজাব, দেশীয় পোশাক; দেশীয় খাবার, যেমন—ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেল, সুন্দরবনের মধু, ঘি, কুমিল্লার রসমালাই, বগুড়ার দই এবং হাতে বানানো বালুসাই মিষ্টি—আমার সিগনেচার আইটেম, এসব নিয়ে কাজ করছি।’

গত এক বছরে শুধু উই (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) থেকে আট লাখ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে মিতাশার। আর অনলাইন পেজ থেকে আলাদা বিক্রি তো আছেই। মাসে গড়ে লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেন তিনি।’

উই-এর ফেসবুক গ্রুপ মিতাশার উদ্যোক্তা-জীবনকে প্রভাবিত করেছে। উই সম্পর্কে মিতাশা বলেন, ‘নারীদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে উই প্ল্যাটফর্ম চমৎকারভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এখানে নারীরা সময় দিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারছে। একসময় যে নারীরা ঘরের বাইরে কাজ করতে পারবে না বলেই নিজেদের ঘর বন্দি রাখত, তারা উই-এর হাত ধরে স্বপ্ন দেখতে শিখেছে। তারা উই-এর মাধ্যমে অনলাইন বিজনেস করতে পারছে। যে কারণে তারা ঘরে বসেই লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারছে।’

উদ্যোক্তা হতে পেরে কেমন লাগছে? মিতাশা রহমান খান বলেন, ‘আসলে কখনও ভাবিনি নিজেকে একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি গড়ে তুলতে পারব। মোটামুটি শখ থেকে শুরু করেছিলাম উদ্যোক্তা-জীবন। কিন্তু একটা পর্যায়ে বুঝতে পারলাম, সেই শখটা আমার পেশায় পরিণত হয়ে গেছে। বলতে গেলে শুরুতে কারও কাছ থেকে তেমন অনুপ্রেরণা পাইনি। কিন্তু এখন আমার ফ্যামিলির সাপোর্ট আছে পুরোপুরি, তারা চায় আমি আমার এই কাজকে নিয়ে আরও সামনে এগিয়ে যাই।’

উদ্যোক্তা হওয়ার পর মধুর স্মৃতি জানতে চাইলে মিতাশা বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছিলাম। সেটা ছিল আমার উদ্যোক্তা-জীবনের সেরা মুহূর্ত। আর উদ্যোক্তা-জীবনের সফলতার পেছনে আমার পুরো পরিবারের অবদান আছে, বিশেষ করে আমার বাবা-মা, ভাই আর আমার স্বামীর অবদান বেশি।’

বলা হয়, অনেকে লাখপতি? আপনি হতে পেরেছেন? উত্তরে মিতাশা বলেন, ‘উই থেকে লাখপতি হিরে পেয়েছি। নতুনদের জন্য পরামর্শ, কখনও হাল ছেড়ে দেবেন না। নিয়মিত কাজ করে যাবেন। ইনশা আল্লাহ, সফলতা পাবেন। যেকোনো কাজে সফলতার মূলমন্ত্র হচ্ছে লক্ষ্য স্থির রাখা।’

মিতাশা তাঁর লক্ষ্যে অবিচল। এ উদ্যোক্তার স্বপ্ন, তাঁর পণ্য শুধু দেশে নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যেন বাইরের দেশে পৌঁছে। মিতাশার স্বপ্ন পূরণ হোক, এ প্রত্যাশা সবার।