বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে সরকারের আয় কমেছে ৫ বছরেই
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের বাণিজ্যিক জাহাজের আয় কমছে। গত পাঁচ বছরে উল্লেখযোগ্য হারেই তা কমেছে। এমন তথ্য পাওয়া গেল জাতীয় সংসদে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের দেওয়া এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে।
সোমবার বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহনমন্ত্রী বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে আয় কমে যাওয়ার এ তথ্য উপস্থাপন করেন।
সংসদে মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের বহরে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনার জন্য ২০১০-১১ অর্থবছরে ১৩টি জাহাজ ছিল। যার মাধ্যমে অপারেশনাল আয় হয় ২৬৬ দশমিক ৬২ কোটি টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে আয় হয় ২৭৬ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে আয় হয় ২৮৪ দশমিক ৫৮ কোটি টাকা।
এর পর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বহরে বাণিজ্যিক জাহাজের সংখ্যা কমে হয় আটটি। এতে অপারেশনাল আয় হয় ১০৩ দশমিক ৪ কোটি টাকা এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আয় আরো কমে দাঁড়ায় ৮৪ দশমিক ১২ কোটি টাকা।
শাজাহান খান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে যাতায়াতের উপযোগী জাহাজ রয়েছে ছয়টি। এর মধ্যে দুটি লাইটারেজ, একটি কনটেইনারবাহী ও তিনটি বহুমুখী পণ্যবাহী জাহাজ রয়েছে।
মন্ত্রী আরো জানান, দুটি লাইটারেজ ট্যাংকার (এমটি) ‘বাংলার জ্যোতি’ ও ‘বাংলার সৌরভ’ কুতুবদিয়া বহির্নোঙরে সমুদ্রে অবস্থানরত মাদার ভেসেল থেকে অপরিশোধিত তেল পরিবহনে নিয়োজিত। একটি কনটেইনারবাহী জাহাজ ‘এমভি বাংলার শিখা’ কনটেইনার পরিবহনে নিয়োজিত। দুটি বহুমুখী পণ্যবাহী জাহাজ খাদ্যশস্য ও সার ইত্যাদি পরিবহনে নিয়োজিত। অবশিষ্ট একটি ‘বাংলার মমতা’ জাহাজ বিক্রয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের অপর এক প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহনমন্ত্রী সংসদকে জানান, দেশে কনটেইনার পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকার অদূরে পানগাঁওয়ে দেশের প্রথম অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ উদ্বোধন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি ও বেসরকারি খাতের একটিসহ মোট চারটি কনটেইনার জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে পানগাঁওয়ে পণ্য আনা-নেওয়া করছে।
মন্ত্রী আরো জানান, চট্টগ্রাম থেকে পানগাঁওয়ে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) চারটি কনটেইনার জাহাজ নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বেসরকারি খাতসহ ২০১৬ সালের মধ্যে এ রুটে পণ্য পরিবহনের জন্য ৩০টি জাহাজ চলাচল করবে।
এ ছাড়া পানগাঁও আইসিটিতে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য আমদানি-রপ্তানিকারকদের তিন বছরের জন্য আর্থিক সুবিধা ও প্রণোদনা হিসেবে ৭০ শতাংশ ট্যারিফ চার্জ হ্রাস করার প্রস্তাব নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান শাজাহান খান।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, তাঁর জানামতে, দেশের নদীগুলোতে ফিটনেসবিহীন কোনো নৌযান চলাচল করে না। বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য নৌযান তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি নৌশুমারি প্রকল্প গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রস্তাবটি বাস্তবায়নের পর বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হওয়া যাবে।