শীতের সবজি বাজারে, নাগালে আসেনি দাম

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর কাঠালবাগান কাঁচাবাজারে সবজি বিক্রির দোকান। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম তেমন কমছে না। বিক্রেতাদের দাবি, শীতকালীন সবজি এখনো পুরোপুরি বাজারে আসেনি। চলতি মাসের শেষের দিকে সরবরাহ বাড়বে, তখন দাম কমবে।

মৌসুম শুরুর ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই এবার বাজারে এসেছে মুলা, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, ওলকচু, পুঁইবিচি, পালংশাক, গাজরসহ শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি। 

গত এক সপ্তাহে প্রতিটি সবজির দাম ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। গত সপ্তাহে যে ফুলকপি বা বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, তা আজ মঙ্গলবার বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে সবজির দাম আরো কমবে। 

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, শীতকালীন সব ধরনের সবজি বাজারে উঠেছে। সরবরাহও ভালো। তবে এখনো নাগালের বাইরে রয়েছে বেশির ভাগ সবজির দাম। আর পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে দামের তফাতও অনেক বেশি। 

খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৩০-৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৫৫-৬০, পাকা টমেটো ৯৫-১১০, গাজর ৩০-৩৫, শসা ১৫, করলা ৫০-৫৫, ঝিঙ্গা ৩০-৩৫, পটোল ৩০-৩৫, কাঁকরোল ৩৫-৪০, ঢেঁড়স ৪০-৪৫, চিচিঙ্গা ৩০-৩৫, কাঁচা পেঁপে ১৫ টাকা, জলপাই ৪০, বরবটি ৩০-৩৫ ও কচুরলতি ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

প্রতিটি বাঁধাকপি ১৫-২০ টাকা, শিম ধরনভেদে কেজিপ্রতি ৪০-৬০, লাউ প্রতিটি ৩০-৩৫, মুলা ১৫, ফুলকপি প্রতিটি ২০, পালংশাক আঁটি ১৫, লাউশাক আঁটি ১৫ টাকা ও লালশাক আঁটি ১২-১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

পাইকারি বিক্রেতা আলী আহমেদ বলেন, ‘দাম কমতে আরো এক মাস সময় লাগবে। এখনো পুরোপুরি শীতের সবজি ওঠেনি। এখনকার বেশির ভাগ সবজির আবাদ আগে হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই অপরিপুষ্ট। চাহিদা থাকায় ও দাম বেশি পেতে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যে পুরোপুরি শীতের সবজি বাজারে আসবে।’ 

হাতিরপুল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান বলেন, ‘পাইকারি বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সবজি বিক্রি করি। পাইকারি বাজারে দাম বেশি থাকলে খুচরা বাজারেও দাম বেশি থাকে।’ 

গত সপ্তাহের মতো চলতি সপ্তাহেও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৬৫-৭৫ টাকা, দেশি রসুন ৭৫-৮০, আমদানি করা রসুন ১০০-১১০, আদা ৮০-৯০, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০-৫৫, মিয়ানমার ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

হাতিরপুল, কাঁঠালবাগান কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে মাঝারি আকারের মিষ্টকুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি লাউশাক ২০ টাকা, লালশাক আঁটি ২০ টাকা, পালংশাক ২৫ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা ও ডাঁটাশাক ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

কারওয়ান বাজারের আড়তদার বাদল মল্লিক দাবি করেন, কাঁচামালের সরবরাহ বেড়েছে। দামও কমেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পরিবহন ভাড়াও কিছুটা বেড়েছে। আর শীত বাড়লে, সরবরাহ আরো বাড়বে। তখন সবজির দাম কমবে। 

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশ ৫০০-৬০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তেলাপিয়া ১৫০-১৮০ টাকা, পাঙ্গাশ ১১০-১৬০, কৈ ১৫০-২২০, বড় দেশি রুই ও কাতল ২৮০-৩৫০, আমদানি করা রুই-কাতল ১২০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষের প্রতি কেজি কৈ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২২০ টাকায়।

নদী-নালার পানি কমায় বাজারে দেশি মাছের সরবরাহ বাড়ছে। এতে দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে ইলিশ, রুই, কৈসহ বিভিন্ন মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে দাম আরো কিছুদিন স্থিতিশীল থাকেবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।