সার্কভুক্ত দেশে আসা পর্যটক আকর্ষণে উদ্যোগ
দেশে গত পাঁচ বছরে বিদেশি পর্যটক তিনগুণ কমেছে। এ খাতে বিনিয়োগ করেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন হোটেল-মোটেলের মালিকরা। তাই বিদেশি পর্যটক বাড়াতে এবার সার্কভুক্ত দেশে আসা পর্যটকদের আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও পর্যটন করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে পর্যটন খাত থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে প্রায় পাঁচগুণ।
ট্যুরিজম বোর্ডের পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে দেশে আসা বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ছয় লাখ থেকে নেমেছে দুই লাখে। তবে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ পর্যটক।
পর্যটন বর্ষ সফল করে তুলতে বিদেশি পর্যটক বাড়াতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাউথ এশিয়া ট্যুরিজম ফেডারেশনের চেয়ারম্যান হাকিম আলী বলেন, ‘সার্কের অন্তর্ভুক্ত যেসব দেশ রয়েছে এর মধ্যে যদি আমাদের এক্সচেঞ্জ হয়, তাহলে আমার বিশ্বাস আমরা অনেক অগ্রসর হতে পারব। যাতে আঞ্চলিক পর্যটনশিল্পকে বাড়াতে সে জন্য আমরা একটি জাতীয় পরিষদ গঠন করেছি। এতে নেপাল, ভুটান, ভারত ও বাংলাদেশের পর্যটন ব্যবসার অগ্রসর হবে।
পর্যটন ব্যবসার মন্দায় গত তিন বছর হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে হোটেল-মোটেল মালিকরা। এমন ক্ষতি এড়াতে পর্যটন বর্ষকে সামনে রেখে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছেন তাঁরা।
হোটেল দ্য কক্স টুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘পর্যটন ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। সরকার যদি একটি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে পর্যটন বর্ষকে আমরা উৎসবমুখর করে উৎযাপন করতে পারব।’
সার্কভুক্ত দেশে আসা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সরকারকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সার্ক ট্যুরিজম ফাউন্ডেশন।
এদিকে, পর্যটন করপোরেশনের নীতি-নির্ধারকরা তাঁদের অবস্থানে থাকছেন স্বল্প সময়ের জন্য। গত ২৫ বছরে এই সংস্থার চেয়ারম্যান পদটি বদল হয়েছে ৩৪ জনের হাতে।
তারপরও কীভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়—প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান অপরূপ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান চেঞ্জ হলেও এখানে কিছু স্থায়ী কর্মকর্তারা আছেন। তাঁরা কিন্তু ট্যুরিজম বিষয়ে অভিজ্ঞ। সময় পেলে আরো দীর্ঘ সময় নিয়ে কাজ করা যায়। তবে যিনি আসবেন তাঁর প্রাথমিক জ্ঞান তো থাকে। এই বিষয়গুলো খুব জটিল নয়। যাঁদের আগ্রহ ও সৃজনশীলতা আছে, তাঁরা এই বিষয়ে অবদান রাখতে পারবেন বলে আমি মনে করি।’
আগামী এক দশকে পর্যটন খাতে যে ১২টি দেশের দীর্ঘমেয়াদে ভালো করার সম্ভাবনার কথা হয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। যথোপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেই সম্ভাবনার বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন এই খাতের সংশ্লিষ্টরা।