কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তায় আরো অগ্রগতি দরকার : ডেনমার্কের মন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
ডেনমার্কের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহায়তামন্ত্রী মগেন্স জেনসেন। ছবি : এনটিভি

ডেনমার্কের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহায়তামন্ত্রী মগেন্স জেনসেন বলেছেন, ‘প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের উৎপাদন খাতে আরো বিনিয়োগ প্রয়োজন। সে জন্য দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকের নিরাপত্তায় আরো অগ্রগতি দরকার।’
 
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে একটি সভা শেষে অল্প কয়েকজন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে এসব কথা বলেন ডেনমার্কের বাণিজ্যমন্ত্রী। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত হ্যান ফুগল এস্কাজায়ের উপস্থিত ছিলেন।
 
বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে মগেন্স জেনসেন বলেন, ‘এ দেশের সম্পদ ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বিভিন্ন উৎপাদন খাতে আরো বিনিয়োগ প্রয়োজন। শুধু তৈরি পোশাক খাতেই নয়, অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতেও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’
 
বাংলাদেশ অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে উন্নতি করেছে বলে প্রশংসা করে জেনসেন বলেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, অর্থনীতিতে আরো অগ্রগতির জন্য এ দেশের সব শ্রেণীর মানুষের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন গুরুত্বপূর্ণ।’
 
জেনসেন বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ বাড়াতে কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে একটি হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব, যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকে।...  আমার আশা, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা অভ্যন্তরীণভাবে সমাধান সম্ভব। কারণ এ সমাধান  বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য শুধু নয়, বরং বাংলাদেশের সব মানুষের জন্যও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর জোরারোপ করে ডেনমার্কের বাণিজ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘এটি কোনো দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
 
অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে জেনসেন বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা, উন্নয়নে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা উন্নয়নশীল জাতির জন্য খুবই প্রয়োজন। যে কোনো  সরকারের বিরুদ্ধের সমালোচনার সমর্থন দিয়ে তিনি বলেন, ‘সমালোচনা উন্নয়নের সহায়ক। যখন কেউ তোমার পেছনে লেগে থাকবে, তখন তুমি তোমার কাজটি ভালোভাবে করবে। এটা দরকার। এটা সবখানেই ঠিক। এটা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন।’

মানবাধিকার নিয়ে একটি প্রশ্নের জবাবে জেনসেন বলেন, ‘উন্নয়নের মৌলিক শর্তই হচ্ছে মানবাধিকার। বাংলাদেশের মানবাধিকারের বিষয়টিতে আমরা নজর রাখব।’
 
বাংলাদেশে তিন দিনের সফরে ১৭ মার্চ ঢাকায় আসেন মগেন্স জেনসেন। গতকাল বুধবার তিনি রানা প্লাজা পরিদর্শনে যান। 

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন ডেনমার্কের বাণিজ্যমন্ত্রী। আজ সেই কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আরো বলব, বাংলাদেশে এখন বস্ত্র খাতের উৎপাদন আরো বেড়েছে। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের উন্নয়ন হয়েছে। ভালো বিনিয়োগ পেতে এটা করতে হবে।’
 
‘আমরা এ দেশের সরকার, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সবার সঙ্গে কাজ করতে পারলে খুশি হব, সে জন্য তৈরি পোশাক খাতের অবস্থার আরো উন্নতি করতে হবে।’ বলেন জেনসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকদের অধিকার ও কর্মক্ষেত্রের উন্নয়নে আরো কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে থেমে থাকলে চলবে না। কাজ করে যেতে হবে।

ডেনমার্কের ৬০টিরও বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এ দেশে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং আরো বাড়তে পারে বলে জানান মগেন্স জেনসেন।
 
পোশাকের দাম বাড়ানোর আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর  
শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে পোশাকের দাম বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। আজ সকালে পোশাক খাত নিয়ে ডেনমার্কের দূতাবাসের ‘বাংলাদেশ- ফার্মিং দ্য ফিউচার’ শীর্ষক এক সেমিনারে  এ কথা জানান তিনি। 

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, ‘পোশাক কারখানার পাশাপাশি শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় সরকার সম্ভব সব কিছুই করছে। সব বাধা পেরিয়ে চলতি অর্থবছর তিন হাজার ৩০০ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশা করছি।’

সেমিনারে বাংলাদেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে সামাজিক সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ডেনমার্কের বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে।’
 
সব কিছু স্থিতিশীল থাকলে ডেনমার্ক এ দেশে আরো বিনিয়োগ করবে বলে জানান মগেন্স জেনসেন।