বাংলাদেশে ভারী যানবাহন এবং নির্মাণ যন্ত্রপাতি উৎপাদনে যৌথ বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বেলারুশের শিল্পপ্রতিষ্ঠান আমকদর। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সার্বিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার যান্ত্রিকীকরণে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা করবে।

আজ সোমবার বরিশালে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠকে বেলারুশের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ‘আমকদরের’ প্রধান সাকোটিন আলেকজান্ডারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফররত দেশটির ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা প্রতিনিধিদল এ আগ্রহের কথা জানান। শিল্প মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে বাংলাদেশের শিল্প খাতে বেলারুশের সরাসরি এবং যৌথ বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা শিল্পমন্ত্রীকে জানান, আমকদর বেলারুশের একটি খ্যাতনামা রাষ্ট্রায়ত্ত ভারী যন্ত্রপাতি ও যানবাহন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। এর উৎপাদিত ট্রাক্টর, ভারী ট্রাক, খনন, কৃষি ও সড়ক নির্মাণ যন্ত্রপাতি বেলারুশ ছাড়াও সিআইএসভুক্ত দেশগুলোতে বিপুল পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর পাঁচ হাজারেরও বেশি ভারী যন্ত্র ও যানবাহন উৎপাদন করছে। তারা বাংলাদেশে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, বায়ো ফার্টিলাইজার উৎপাদন, মহাসড়ক ও বিমানবন্দর নির্মাণ, ফার্নিচার এবং সেবা প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত শিল্প খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানান।

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’
 
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে। উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দেশে পদ্মা সেতু, বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে উড়াল সেতুসহ বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে দেশে হাল্কা ও ভারী যানবাহনের চাহিদা বেড়েছে।’ বাংলাদেশে নির্মাণ যন্ত্রপাতি ও ভারী যানবাহন উৎপাদন খাতে যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে এলে উভয় দেশ লাভবান হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সরকার আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। কৃষি উৎপাদন সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী শিল্প কারখানাকে কর রেয়াতসহ বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এ খাতে বিনিয়োগ করলে বেলারুশের উদ্যোক্তাদেরও একই সুযোগ দেওয়া হবে।’

বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ হোসেন চৌধুরী, বেলারুশ প্রতিনিধিদলের সদস্য সুলিয়াক সিয়ারাই, পজনিয়াক আন্দ্রেই এবং বাংলাদেশের আরএমএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায় ও প্রকৌশলী কিশোলয় পাল উপস্থিত ছিলেন।