নতুন প্রজাতির ফুল উদ্ভাবনের আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার ফেস্ট’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী ফুলের উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রজাতি ও নানা রঙের ফুল উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি সুগন্ধিযুক্ত ফুলের চাষ বাড়ানোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার ফেস্ট’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী ফুলের উৎসবের উদ্বোধনকালে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। ‘দেশি ফুলের, দেশি বাজার’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে অর্থকরী ফসলের মধ্যে এখন ফুল অন্যতম। আগে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ না হলেও এখন পরিধি সম্প্রসারণ হয়েছে, বাজার বড় হচ্ছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আগে আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। এখন তা পূরণ হওয়ায় ফুল উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে সরকার। ফুল চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তুলতে চাষিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।’

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, আশির দশকে দেশে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ শুরু হয়। বর্তমানে ফুলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিশাল কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র। প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ১৬ হাজার কৃষক সরাসরি ফুল চাষ করছেন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কয়েক লাখ লোক ফুল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এমনকি এর পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।

আবদুর রহিম বলেন, বর্তমানে দেশে টাকার হিসাবে ৮০০ কোটি টাকার ফুল উৎপাদিত হয়। এখন বাংলাদেশে ফুল অর্থকরী ফসল হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে।

কৃষিবিদ হামিদুর রহমান বলেন, ১৯৮৩ সালে ৩০ শতক জমিতে রজনীগন্ধা ফুল চাষের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে ফুল উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমান দেশে ২৩টি জেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়। এতে বছরে প্রায় ৭০০-৮০০ কোটি টাকার ফুল উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদা মিটিয়ে কিছু কিছু বিদেশে যাচ্ছে।

আয়োজকরা জানান, দেশি ফুলের বৈচিত্র্যের সঙ্গে মানুষের পরিচয় বাড়াতে এ ফেস্টের মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়া ফুলের সামগ্রিক ব্যবহার আরো বাড়াতে এই ফেস্ট সহায়ক হবে বলে মনে করেন তাঁরা।

ফ্লাওয়ার ফেস্টে অংশ নেওয়া বিভিন্ন অঞ্চলের ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা নানা ফুল দিয়ে স্টলগুলো সাজিয়েছেন। প্রদর্শনীতে গোলাপ, গাঁদা, জারবেরা, রজনীগন্ধাসহ নানা ফুল প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে।

ফেস্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ‘ফুল চাষের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির উপদেষ্টা ড. গয়ানাথ সরকার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, কৃষি সচিব মইনউদ্দিন আবদুল্লাহ, সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক।

এই মেলার আয়োজন করেছে ইউএসএআইডির এভিসি প্রকল্প, বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি (বিএফএস) ও দেশি ফুল ডটকম। মেলায় ফুল উৎপাদক, ব্যবসায়ী, ফুলসংশ্লিষ্ট সংগঠন, সাজসজ্জা বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের ২০টি স্টল অংশ নিয়েছে। মেলা চলবে বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত।