বিনিয়োগের উৎস না খোঁজার দাবি রিহ্যাবের
আগামী অর্থবছরের (২০১৬-১৭) বাজেটে আবাসন খাতে পাঁচ থেকে ১০ বছর বিনা শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। রিহ্যাব নেতাদের দাবি, আবাসন খাতে বিনিয়োগ হওয়া অর্থের উৎস খোঁজা যাবে না।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃপক্ষের কাছে রিহ্যাব নেতারা এ দাবি জানান।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
রিহ্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি রবিউল হক বলেন, বর্তমানে শর্তসাপেক্ষে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। তবে আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরের জন্য এ সুযোগ থাকতে হবে।
আগামী বাজেটে সেকেন্ডারি বাজার প্রচলন, কর অবকাশ, নিবন্ধন কর কমানোসহ ১৮টি দাবি জানিয়েছে রিহ্যাব।
অপ্রদর্শিত অর্থে ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ দেওয়া হয় ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে। এ ক্ষেত্রে অর্থ আইন, ২০১৩-এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এ ১৯ বিবিবিবিবি নামের একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়। এই ধারায় বলা হয়, নির্ধারিত কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা যাবে। অবৈধ ও অপরাধ সংঘটন করে অর্জিত কোনো অর্থ বিনিয়োগ করা যাবে না। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীকে অর্থের উৎস উল্লেখ করতে হবে। মূলত এখানেই আপত্তি রিহ্যাবের।
রিহ্যাবের নেতাদের দাবি, যারা ফ্ল্যাট কিনবেন, তাঁদের আয়ের উৎস না খোঁজার বিষয়টি উল্লেখ করে আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ (বিবিবিবিবি) ধারা পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে। ২০১১ সালে এটি রহিত করা হয়।
বিনা শর্তে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগের পক্ষে আলোচনা সভায় রিহ্যাব যুক্তি তুলে ধরে। আইনটি পুনঃপ্রবর্তন করা না হলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। এ ছাড়া অপ্রদর্শিত অর্থ দেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হলে ভবিষ্যতে ওই বিনিয়োগকারীরা করের আওতায় আসবে। তাতে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন রিহ্যাব নেতারা।
রিহ্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, বর্তমানে ফ্ল্যাট ও প্লট নিবন্ধনের সময় ১৪ শতাংশ কর ও ফি দিতে হয়। এর মধ্যে ৪ শতাংশ করে গেইন ট্যাক্স, স্ট্যাম্প ফি ৩ শতাংশ, নিবন্ধন ফি ২ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ ও ৩ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) দিতে হয়। এই অত্যধিক ব্যয়ে ক্রেতারা নিবন্ধনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
এ পরিস্থিতে সংগঠনটির প্রস্তাব, সব মিলিয়ে নিবন্ধন-সংশ্লিষ্ট কর ও ফি ৭ শতাংশ করা হোক। এর মধ্যে ২ শতাংশ গেইন ট্যাক্স, স্ট্যাম্প ডিউটি ও মূসক দেড় শতাংশ, নিবন্ধন ফি ও স্থানীয় সরকার কর ১ শতাংশ থাকবে।
আগামী বাজেটে পরিবেশবান্ধব আবাসন নির্মাণে কর রেয়াত সুবিধাও চায় রিহ্যাব। এমন সুযোগ দিলে উদ্যোক্তারা পরিবেশবান্ধব প্রকল্প নিয়ে আগ্রহী হবেন বলে মনে করে সংগঠনটি।